Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকসুতে হামলাকে অপারেশন সার্চলাইটের সঙ্গে তুলনা করলেন নুর

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২২ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:৪০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে দুই বছর আগে মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনাকে একাত্তরের অপারেশন সার্চলাইটের সঙ্গে তুলনা করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নতুন রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপারেশন সার্চলাইট চালিয়েছিল। আর সেদিন (২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর) এনআরসি, সিএএ (ভারতের নাগরিকত্ব আইন) নিয়ে প্রতিবাদ করায় ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা)-এর দালালরা, উগ্র হিন্দুত্ববাদের দোসরেরা ডাকসু ভবনে আমাদের ওপর হামলা করে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ডাকসু ভবনে হামলার দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, এই হামলার বিষয়ে নিশ্চয় সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশনা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানত। আমি তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর স্যারকে ফোন করেছিলাম, উপাচার্য স্যারকে ফোন করেছিলাম। সেদিন কাউকেই ফোনে পাইনি। আমাদের কাছে সব তথ্য আছে— হামলার সময় প্রক্টর স্যার তার অফিসে বসেছিলেন।

২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে ভিপির কক্ষের বাতি নিভিয়ে নুরুল হক নুরসহ তার সঙ্গীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সেদিন হামলার ঘটনায় নুরসহ অন্তত ৩০ জনের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

ওই হামলার আগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও সেখানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। হামলার ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়। তদন্ত কমিটিকে ছয় কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। তবে দুই বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

তদন্ত কমিটি প্রসঙ্গে নুরুল হক নুর বলেন, ছয় কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। সেই তদন্ত দুই বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। আপনারা কি বুঝতে পারছেন, কারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে?

তিনি বলেন, আমরা যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলাম, বর্তমান ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি আমাদের দেখতে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, হামলাকারীদের বিচার হবে। কিন্তু আপনারা দেখেছেন, বিচার কি হয়েছে? তবে কি বোঝা যাচ্ছে এই ঘটনা কারা, কোথা থেকে, কীভাবে ঘটিয়েছে?

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি মনে করেন, ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বরের ঘটনা কোনো সাধারণ ঘটনা ছিল না। ভারতের এজেন্টরা এই ঘটনা ঘটিয়েছিল। ওই সময় হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নুরুল হক নুর।

মুক্তিযুঞ্চকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ পৃষ্ঠপোষকতা করে অভিযোগ তুলে সমাবেশে নুর বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ মূলত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের একটি সংগঠন। ছাত্রলীগের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত, মার্ডার কেসের আসামি, তাদের দিয়েই এই সংগঠনটি গড়া হয়েছে। এ সংগঠনটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এ দেশে থাকা ভারতের এজেন্টরা এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’।

২২ ডিসেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করে নুর বলেন, সেদিন যখন এনআরসিসির প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রোগ্রাম করছিলাম, তখন তারা আমাদের ওপর হামলা করে। ২২ ডিসেম্বর মূলত আমাদের কোনো প্রোগ্রাম ছিল না। ১৭ ডিসেম্বরের হামলায় আমরা যারা আহত হয়েছিলাম, তার ফলোআপ চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়েছিলাম। ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সেদিন ছোট ভাইদের নিয়ে ডাকসু ভবনে এসেছিলাম। আমি এখনো বুঝে পাই না— হঠাৎ সঞ্জিত-সাদ্দাম আমার রুমে ঢুকল, তাদের পেছনে ভেড়ার পালের মতো তাদের ছেলেপেলে ঢুকে একের পর এক আমাদের মারতে মারতে বের করে দিলো। কয়েকজনকে রক্তাক্ত করে ফেলে তারা।

সমাবেশ শেষে প্রতিবাদী মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করেন ছাত্র ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

ডাকসুতে হামলা নুরুল হক নুর

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর