Tuesday 29 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেসিসকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চাই: হিমিকা

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৩৪ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৪৯

ঢাকা: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনে পরিচালক পদে লড়ছেন তরুণ নারী উদ্যোক্তা গিগা টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা। ওয়ান টিমের হয়ে তিনি নির্বাচন করছেন। এর আগে তিনি বেসিসের পরিচালক ছিলেন। ২০১৪-১৬ মেয়াদে সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বেক্সিমকো কম্পিউটারের উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করছেন তিনি।

নির্বাচিত হলে বেসিসকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চান হিমিকা। সংগঠনটির সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে চান। বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করে বেসিসকে আরও এগিয়ে নেওয়াও তার লক্ষ্য। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপে তরুণ এই উদ্যোক্তা বেসিসকে নিয়ে তার এসব পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সামিরা জুবেরী হিমিকা বলেন, বেসিস
তো এখন আর ৩০০ বা ৪০০ সদস্যদের সংগঠন নয়, সদস্য প্রায় ১৮০০। তাদের সঠিকভাবে চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে হলে সচিবালায়কে শক্তিশালী করতে হবে। একটি নির্বাহী টিম প্রয়োজন। নির্বাচিত হলে সে লক্ষ্যে কাজ করব।

তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল থেকে পরিকল্পনা আছে— যারা যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষ ও অভিজ্ঞ, তাদের কমিটিতে যুক্ত রাখতে চাই। যারাই নির্বাচিত হোক, ১১ জন কিন্তু সবকিছু করতে পারবে না। বিশেষ করে ৫০০ কোটি ডলারের মার্কেট যদি হয় এবং ১৮০০ কোম্পানি যদি থাকে, বেসিসকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বেসিসের স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করতে চাই, এখানে কোনো গোপনীয় বিষয় থাকার কিছু নেই। বেসিসের মেম্বারদের প্রতি কমিটির সৎ থাকার একটি বিষয় আছে। সেটিও আমরা করতে চাই।

বিজ্ঞাপন

হিমিকা বলেন, বেসিস সদস্যরা করোনা সংক্রমণের সময় সরকারের স্টিমুলাস সাপোর্ট পায়নি। অথচ অন্য ইন্ডাস্ট্রি এই সহযোগিতা পেয়েছে। ২০২৪ পর্যন্ত আমরা ট্যাক্স ফ্রি আছি, কিন্তু এটিই একমাত্র সুবিধা না। আরও অনেক সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকার বসে আছে। বেসিস সংগঠন হিসেবে কিছু আদায় করতে পারিনি। বেসরকারি খাতও করোনা দুর্যোগ এর সময় খরচ বাঁচাতে আইটি কোম্পানিদের অনেক কাজ বাতিল করেছেন। সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখে এই পরিস্থিতিতে বেসিস সদস্যদের ব্যবসা এবং কাজের নিরাপত্তার অনেক সুযোগ আছে, কিন্তু আমরা আদায় করতে পারি না। সামনে যদি আমি বোর্ডে আসি, টিম মেম্বারদের নিয়ে প্রণোদনা, নীতিমালার মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে চাই।

আরও পড়ুন- বেসিস নির্বাচনে তারুণ্যের হাতছানি

তরুণ এই প্রার্থী আরও বলেন, নীতিমালা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা-প্রণোদনা আদায় করা যায়। নীতিমালা যদি ঠিকমতো হয়, তাহলে সেটি ভবিষ্যতে বেসিস সদস্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি নির্বাচনে জিততে পারলে মূলত এসব নীতিমালা নিয়েই বেশি সময় কাটাতে চাই।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই নারী উদ্যোক্তা নারীদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনার কথাও জানালেন। হিমিকা বলেন, মেয়েরা একটি পর্যায় পর্যন্ত যাওয়ার পর উঠতে পারে না। অন্যান্য খাতের মতো একই চিত্র আইটি খাতেও। শীর্ষস্থানে নারী উদ্যোক্তাদের এবং আইটি পেশাদারদের আসার সুযোগ খুব কম হয়। আমি যেহেতু ওই জায়গাগুলো পার করে আসার চেষ্টা করেছি, সামনে আরও করব, তাই এই পথচলায় আমি যা কিছু শিখেছি সেগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার আগের ফোরামে বেসিস উইমেন ফোরাম করেছিলাম। সেটি এখন তেমন কার্যকর না। সেরকম কার্যকর কিছু করতে চাই।

হিমিকা আরও বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং আরও বাড়াব। আমাদের উইমেন ফোরামকে আরও শক্তিশালী করব। একজন মেয়ের সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে আরেকজন মেয়ের কাজ করাটা খুব জরুরি। আমি সে লক্ষ্যেও কাজ করব। আইসিটি খাতে বিভিন্ন অফিসে নারীদের কাজ করার পরিবেশের মানোন্নয়নে জোর দেবো। অফিসগুলোতে নারী কর্মীরা যেন তাদের শিশুদের নিয়ে আসতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তায় ডে কেয়ার সিস্টেম চালু করা যেতে পারে। এর জন্য নীতিমালা প্রণয়ন থেকে শুরু করে যা কিছু সহায়তা প্রয়োজন, সব করতে চাই। আইটি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়ে যারা লেখাপড়া করছে, তাদের বড় একটি অংশই দেশের বাইরে চলে যায়। তাদের কীভাবে দেশের বিভিন্ন উদ্যোগে সম্পৃক্ত করা যায়, তার চেষ্টাও করব।
গিগা টেক লিমিটেডের এই এমডি বলেন, ‘অ্যাসোসিয়েশনকে সব কাজ নিজ হাতে করতে হয় তা না। পার্টনারশিপ ও কোলাবোরেশনের মাধ্যমে অনেক কাজে আরও বেশি গতি দেওয়া সম্ভব। তাছাড়া বেসিস অন্যান্য অ্যাসোসিয়েশন যেমন বাককো, ইক্যাব এর সাথে কোলাবোরেশনে আইটি খাতের মূল সমস্যা এবং সাফল্য নিয়ে কাজ কাজটি করতে চাই।’

বেসিস নির্বাহী পরিষদ ২০২২-২০২৩-এর নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর, গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিন জন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুই জন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুই জন এবং আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

গিগা টেক লিমিটেড টপ নিউজ বেসিস নির্বাচন সামিরা জুবেরী হিমিকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর