বিজ্ঞাপন

বেসিস নির্বাচনে তারুণ্যের হাতছানি

December 21, 2021 | 11:41 pm

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচন জমে উঠেছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর দেশের সফটওয়্যার খাতের এই সংগঠনটির নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে। প্রার্থীরা এখন প্রচারণায় পুরোদমে ব্যস্ত। নির্বাচনে এবার দুই প্যানেলেই বেশ কিছু তরুণ মুখ রয়েছে। খাতটি নিয়ে এসব তরুণরা শোনাচ্ছেন আশার বাণী। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আইসিটি খাতের পরবর্তী ৫০ বছর নিয়েও। বিশ্লেষকরা বলছেন, তারুণ্যনির্ভর বেসিস নির্বাচনে তরুণদের পাল্লা বেশ ভারী। নির্বাচনে তাদের জয়ী হওয়ার সম্ভবনাও বেশি।

বিজ্ঞাপন

বেসিস নির্বাহী পরিষদ ২০২২-২০২৩-এর নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর, গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিন জন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুই জন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুই জন এবং আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।

বেসিসের নির্বাচনে এবার প্রতিন্দ্বিতা করছে দু’টি প্যানেল— সিনার্জি স্কোয়াড ও ওয়ান টিম। সিনার্জি স্কোয়াডের নেতৃত্বে রয়েছেন হাবিবুল্লাহ এন করিম। তিনি বেসিসের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। এর আগে দুই বার সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নেতৃত্বাধীন সিনার্জি স্কোয়াডের স্লোগান— ‘সবকিছুর কেন্দ্রে সদস্যরা, একসঙ্গে গর্জাব আমরা’। আরেক প্যানেল টিম ওয়ানের নেতৃত্বে রয়েছেন রাসেল টি আহমেদ। এর আগে তিনি বেসিসের সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন। এই প্যানেলের স্লোগান— ‘এভরি মেম্বার ম্যাটারস’। দুই প্যানেলেই প্রবীণদের সঙ্গে নবীন উদ্যোক্তারা রয়েছেন।

বেসিস নির্বাচন বোর্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে বেসিস নির্বাচন হবে। সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে ভোট দেবেন।’

বিজ্ঞাপন

বেসিস নির্বাচনে সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে প্রথমবারের মতো লড়ছেন তথ্য প্রযুক্তি খাতের তরুণ উদ্যোক্তা মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক। তিনি অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেডের দ্য ম্যান অব স্টিল (চেয়ারম্যান) ও ক্রান্তি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের পরিচালক ও সিইও। সিনার্জি স্কোয়াডের হয়ে নির্বাচন করছেন তিনি।

জানতে চাইলে রিসালাত সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের প্যানেলের সামগ্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের আইটি ও আইটিইএস ইন্ডাস্ট্রিকে ব্র্যান্ডিং করতে চাই। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংয়ের মতো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবনির্ভর প্রযুক্তির জন্য দেশে রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ও মার্কেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই। ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল কমার্স, ওটিটি ও কনটেন্ট মনিটাইজেশন নিয়ে পলিসি অ্যাডভোকেসি নিয়ে অব্যাহতভাবে কাজ করব।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের লোকাল মার্কেটও বড়। তারপরও এখানে দেশের বাইরের সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজেরাই নিজের দেশের সফটওয়্যারকে বিশ্বাস না করার অর্থ হলো আমাদের ব্রান্ডিংয়ের ঘাটতি রয়েছে। আমরা ব্র্যান্ড ডেভেলপ করব, সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’কে আরও প্রমোট করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেশের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিকে আরও বেশি ব্র্যান্ডিং করতে চাই। দেশের বাইরেও আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আরও ব্রান্ডিং করব।

তরুণ এই প্রার্থী বলেন, আমি বেসিসের পক্ষে আইসিটি বিভাগের সঙ্গে ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে ভলান্টিয়ার হিসেবে যা যা কাজ করেছি এবং নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দেশ-বিদেশে যে সাফল্য পেয়েছি তা আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিয়ে গর্বের একটি জায়গায় যেতে চাই। নির্বাচিত হলে আগামী দুই বছরে ভবিষ্যৎ ৫০ বছরের জন্য বীজ বপন করতে চাই, বেসিসের প্রতিষ্ঠাতারা একসময় যে স্বপ্ন দেখেছিলেন।

নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পরিচালক পদে লড়ছেন বন্ডস্টাইন টেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মীর শাহরুখ ইসলাম। তরুণ এই প্রার্থী সিনার্জি স্কোয়াডের হয়ে নির্বাচন করছেন। সারাবাংলাকে শাহরুখ বলেন, আমার কাছে মনে হয় বেসিসকে যদি ফিউচারিশটিক ভিশন-ভিত্তিক ট্রেড বডিতে পরিণত করতে হয়, তাহলে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজির (আইওটি, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট) ওপর নির্ভর করা ছাড়া উপায় নেই। সেই জায়গাটির ওপর ভিত্তি করেই আমার নির্বাচনে আসা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি দু’টি বিষয়ে ফোকাস করতে চাই। প্রথমত, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি অর্থাৎ আইওটি, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তি নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করতে চাই। এসব প্রযুক্তির জন্য আমাদের ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা অপরিহার্য। আমাদের বৈশ্বিক মানে পৌঁছাতে হবে যেন আমরা বিশ্বের মধ্যে প্রযুক্তি খাতের একটি বিশ্বস্ত গন্তব্যে পরিণত হতে পারি। দ্বিতীয়ত, আমি সদস্য সেবা নিয়ে কাজ করতে চাই। বর্তমানে আমাদের সদস্য সেবার যে প্রক্রিয়া রয়েছে, সেখানে আমরা সদস্যদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার বিষয়টি চালু করতে পারি। অর্থাৎ আমাদের সদস্যরা বেসিস থেকে যে সেবাই নেবেন, সেই সেবার মান নিয়ে পর্যবেক্ষণ জানাতে পারবেন। এটি জানতে পারলে আমাদের বুঝতে সুবিধা হবে, কোন সেবাটির মান উন্নয়নে আমাদের কাজ করতে হবে। অর্থাৎ সদস্যদের জন্য সেবাপ্রাপ্তি আরও মানসম্মত ও সহজ করাই হবে আমার লক্ষ্য, যার মাধ্যমে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত রেখে একটি সাংগঠনিক কাঠামো আমরা গড়তে পারি।

তরুণ এই প্রার্থী আরও বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখানোয় বিশ্বাস করি। ১০ বছর আগে ব্যবসা শুরুর সময়েও স্বপ্ন দেখতাম, একদিন আমাদের দেশে অনেকগুলো টেক কোম্পানি থাকবে, আমরাও পৃথিবীর বড় বড় জায়ান্ট টেক ডেসটিনেশনের মতো মার্কেট লিড করব। সেই স্বপ্ন আজ অনেকাংশেই পূরণ হচ্ছে। সেই স্বপ্নকে পুরোপুরিভাবে পূরণ করতে আমার মনে হয় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আর সেখানেই আমার কাজ করার এবং অবদান রাখার জায়গা আছে বলে মনে করি। আমার প্রত্যাশা, বেসিসের সকল সদস্য আমাকে সমর্থন করবেন।’

নির্বাচনে প্রথমবারের মতো লড়ছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারী উদ্যোক্তা স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রেজওয়ানা খান। ওয়ান টিমের প্যানেল থেকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন তিনি।

রেজওয়ানা খান সারাবাংলাকে বলেন, সদস্যদের সমস্যা সমাধানে আমাদের প্যানেল সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। বেসিসের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা হবে। অনেক কিছুই আমরা দেরিতে জানি, এই সমস্যা যেন না থাকে তার চেষ্টা করা হবে। সফটওয়্যার ক্রয়নীতিমালা তৈরিতে কাজ করব। স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে বেসিসের আরও বেশি সমন্বয় প্রয়োজন। সেদিকে নজর থাকবে। দেশীয় প্রকল্পে যেন দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাজ পায়, সেজন্য আমাদের প্যানেল কাজ করবে।

আউটসোর্সিংয়েও মনোযোগী হতে চান রেজওয়ানা। তিনি বলেন, আউটসোর্সিংয়ের জন্য আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করব। আউটসোর্সিং মানেই ডাটা এন্ট্রি বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নয়। আউটসোর্সিং অনেক বড় একটি খাত। এখানে মেশিন লার্নিং, আইওটি, ব্লক চেইন, বিআই (বিজনেস ইন্টিলিজেন্ট), সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়ও রয়েছে। অন্যান্য দেশ থেকে কোম্পানিগুলো এসে এসব কাজ নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো বেশি সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য আমরা এ ধরনের কাজের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্টের কাজ করব।

তিনি বলেন, সরকারি কাজগুলো অনেক ক্ষেত্রে দেশি কোম্পানিগুলো পাচ্ছে না। সরকারকে যেন এমন একটি নীতিমালা দিতে পারি যেখানে কাজগুলো দেশেই থাকে, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করব। আর যে কাজগুলো দেশি কোম্পানি পাচ্ছে, হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিই সেই কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে বেসিসের সব সদস্যদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। আমরা সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, আমি চাই তরুণ উদ্যোক্তারা যেন তরুণদের উদ্যোগে এগিয়ে আসে। ব্যক্তিগতভাবে নারীরা যদি নতুন কিছু করতে চায়, তাতে আমি সমর্থন করার চেষ্টা করি। ব্যবসা সম্প্রসারণে কীভাবে কাজ করতে হয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কীভাবে গড়ে তুলতে হয়— এই বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করে থাকি। নির্বাচিত হলে নারীরা যেন আরও অভিজ্ঞ হয়ে আইটি খাতে প্রবেশ করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করব।

বেসিস নির্বাচনে সিনার্জি স্কোয়াডের হয়ে পরিচালক পদে লড়ছেন তরুণ উদ্যোক্তা রাশাদ কবির। ড্রিম ৭১ বাংলাদেশ লিমিটেডের এমডি তিনি। এর আগেও বেসিস পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবারও নির্বাচন করছেন। সারাবাংলাকে রাশাদ বলেন, গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণে কাজ করেছি। আমরা জাপানে বেসিস জাপান ডেস্ক করেছি। দেশের ট্রেড বডির ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক। আমাদের অনেকগুলো কোম্পানি এখন জাপান থেকে ভালো অর্ডার পাচ্ছে। আর সেটি সম্ভব হচ্ছে জাপান ডেস্কের কারণে। আমাদের এখন আরও চারটি ডেস্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে— যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, আরব আমিরাত ও আফ্রিাকাতে। এই ডেস্কগুলোর কাজ হবে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোতে তুলে ধরা, সেই দেশগুলোর বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা।

তিনি বলেন, সরকার আইসিটি পণ্য রফতানির আয়ে প্রণোদনা দিচ্ছে। এই প্রণোদনা কিন্তু আমরা বেসিস সদস্যদের জন্য নিয়ে এসেছি। নভেম্বর মাস পর্যন্ত ২৮৫টি কোম্পানি ৩১৬ কোটি টাকার প্রণোদনা পেয়েছে। এটি আমাদের বোর্ডের খুবই বড় অর্জন। তারপরও এখানে আমাদের বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যারা সফটওয়্যারের ব্যবসা করে, তারা কিন্তু এখনো ক্যাশ ইনসেনটিভের আওয়াতায় নেই। আবার ফ্রিল্যান্সার মার্কেটে কর্মরতরাও প্রণোদনা পাচ্ছে না। নির্বাচিত হলে এই দুদু’ জায়াগায় কাজ করব।

রাশাদ বলেন, সরকারি কাজে বেসিস সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করে আমরা এটি করতে পেরেছি। আমাদের সামনে আরকেটি চ্যালেঞ্জ আছে— বিদেশি তহবিলের প্রকল্পগুলোতে যেন বেসিস সদস্যদের অংশগ্রহণ যেন বাধ্যতামূলক করতে পারি। সে লক্ষ্যে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও করব।

দক্ষ জনবল তৈরিতে নীতিলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সবাই মানবসম্পদ উন্নয়নের কথা ভলছে। এআই, বিগ ডাটা, ব্লক চেইন, রোবটিক্স— এরকম খাতের জন্য তো লোকবল লাগবে। এটি বেসিস বা সরকার একা করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পারবে, কিন্তু কিছুটা। সেজন্য নীতিমালা প্রয়োজন। এখানে বেসিসের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিন পক্ষ মিলে যদি একটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগ্য একটি পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি তৈরি করতে পারি, সেটি অনেক বেশি কার্যকর একটি পদক্ষেপ হবে।

তিনি আরও বলেন, সব মিলিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক— দুই বাজার নিয়েই কাজ করতে চাই। সদস্য কোম্পানিগুলো যেন ভালো থাকে, ব্যবসা বাড়াতে পারে, নীতি প্রণয়ন করে যেন বাজার সম্প্রসারণ করা যায়— এসব দিকে এখনো কাজ করছি, ভবিষ্যতেও কাজ করতে চাই।

বেসিস নির্বাচনে পরিচালক পদে লড়ছেন তরুণ নারী উদ্যোক্ত গিগা টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরা জুবেরী হিমিকা। বেক্সিমকো কম্পিউটারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। ওয়ান টিমের হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন তিনি। এর আগেও বেসিসের পরিচালক ছিলেন।

সারাবাংলাকে হিমিকা বলেন, আমি মনে করি বেসিসে একটি নির্বাহী টিম থাকা খুব প্রয়োজন। বেসিসের মতো সংগঠনে গত বছর চেষ্টা করছিলাম যেন একটি সচিবালয় তৈরি হয়। নির্বাহী পরিচালক বা এ ধরনের পদ যেন আসে। বেসিস তো এখন আর ৩০০ বা ৪০০ সদস্যদের সংগঠন নয়, সদস্য প্রায় ১৮০০। তাদের সঠিকভাবে চাহিদা অনুযায়ী সেবা দিতে হলে সচিবালায়কে শক্তিশালী তকরতে হবে। সে কারণেই একটি নির্বাহী টিম প্রয়োজন। নির্বাচিত হলে সে লক্ষ্যে কাজ করব।

তিনি বলেন, আমি বেসিসের স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করতে চাই। এখানে গোপনীয় বলে কিছু থাকার প্রয়োজন নেই। বেসিস সদস্যদের প্রতি কমিটির সৎ থাকার একটি বিষয় আছে। সেটিও আমরা করতে চাই। বেসিস সদস্যরা করোনা সংক্রমণের সময় সরকারের কোনো সহযোগিতা পায়নি। অথচ সরকার বসে আছে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য। ২০২৪ পর্যন্ত আমরা ট্যাক্স ফ্রি আছি, কিন্তু এটিই একমাত্র সুবিধা না। আরও অনেক সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকার বসে আছে। আমরাই সংগঠন হিসেবে কিছু আদায় করতে পারিনি। বেসরকারি খাতেও অনেক সুযোগ আছে, কিন্তু আমরা আদায় করতে পারি না। সামনে যদি আমি বোর্ডে আসি, টিম মেম্বারদের নিয়ে প্রণোদনা, নীতিমালার মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে চাই।

হিমিকা বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং আরও বাড়াব। আমাদের উইমেন ফোরামকে আরও শক্তিশালী করব। একজন মেয়ের সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে আরেকজন মেয়ের কাজ করাটা খুব জরুরি। আমি সে লক্ষ্যেও কাজ করব। আইসিটি খাতে বিভিন্ন অফিসে নারীদের কাজ করার পরিবেশের মানোন্নয়নে জোর দেবো। অফিসগুলোতে নারী কর্মীরা যেন তাদের শিশুদের নিয়ে আসতে পারেন, সেজন্য ডে কেয়ার সিস্টেম চালু করার ব্যবস্থা করব। এর জন্য নীতিমালা প্রণয়ন থেকে শুরু করে যা কিছু সহায়তা প্রয়োজন, সব করতে চাই। আইটি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়ে যারা লেখাপড়া করছে, তাদের বড় একটি অংশই দেশের বাইরে চলে যায়। তাদের কীভাবে দেশের বিভিন্ন উদ্যোগে সম্পৃক্ত করা যায়, তার চেষ্টাও করব।

তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশনকে সব কাজ নিজ হাতে করতে হয় তা না। পার্টনারশিপ ও কোলাবোরেশনের মাধ্যমে অনেক কাজে আরও বেশি গতি দেওয়া সম্ভব। নির্বাচিত হলে আমি সেই কাজটিও করতে চাই।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন