Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য লড়বেন রেজওয়ানা

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩:৪৫

ঢাকা: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নির্বাচনে প্রথমবারের মতো পরিচালক পদে লড়ছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নারী উদ্যোক্তা স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রেজওয়ানা খান। ওয়ান টিমের প্যানেল থেকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন তিনি।

রেজওয়ানা বলছেন, সরকারি কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে গুটিকয় বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানের যে সিন্ডিকেট রয়েছে, তা ভেঙে দিতে চান তিনি। দেশীয় কাজে দেশীয় প্রতিষ্ঠান যেন অগ্রাধিকার পায়, সে লক্ষ্যেও কাজ করবেন। দক্ষ জনবল তৈরিতে দক্ষতা উন্নয়নও তার লক্ষ্য। বেসিস নির্বাচন নিয়ে সারাবাংলার সঙ্গে আলাপে এই তরুণ নারী উদ্যোক্তা তুলে ধরেন তার নানা পরিকল্পনার কথা।

বিজ্ঞাপন

প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেওয়া রেজওয়ানা খান বলেন, সদস্যদের সমস্যা সমাধানে আমাদের প্যানেল সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। বেসিসের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা হবে। অনেক কিছুই আমরা দেরিতে জানি, এই সমস্যা যেন না থাকে তার চেষ্টা করা হবে। সফটওয়্যার ক্রয়নীতিমালা তৈরিতে কাজ করব। স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। অন্যান্য বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে বেসিসের আরও বেশি সমন্বয় প্রয়োজন। সেদিকে নজর থাকবে। দেশীয় প্রকল্পে যেন দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাজ পায়, সেজন্য আমাদের প্যানেল কাজ করবে।

আউটসোর্সিংয়েও মনোযোগী হতে চান রেজওয়ানা। তিনি বলেন, আউটসোর্সিংয়ের জন্য আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করব। আউটসোর্সিং মানেই ডাটা এন্ট্রি বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নয়। আউটসোর্সিং অনেক বড় একটি খাত। এখানে মেশিন লার্নিং, আইওটি, ব্লক চেইন, বিআই (বিজনেস ইন্টিলিজেন্ট), সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিষয়ও রয়েছে। অন্যান্য দেশ থেকে কোম্পানিগুলো এসে এসব কাজ নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো বেশি সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য আমরা এ ধরনের কাজের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্টের কাজ করব।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- বেসিস নির্বাচনে তারুণ্যের হাতছানি

তিনি বলেন, আমাদের সদস্যদের ট্যাক্স-ভ্যাট নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এনবিআরের ট্যাক্স এক্সাম্পশন (কর অব্যাহতি) সার্টিফিকেট পেতে সদস্যদের বেগ পোহাতে হয়। তা দূর করতে আমরা এনবিআরের সঙ্গে কাজ করব। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসিসের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের সফটওয়্যার পার্কগুলোতে বেসিসের কোম্পানিগুলো যেন জায়গায় পেতে পারে, সেজন্য আমরা কাজ করব। রফতানি আয়ে আমরা যে প্রণোদনা পাই, সেটি পেতে অনেক সময় দেরি হয়, বিড়ম্বনায় পড়তে হয়— এই সমস্যা দূর করতে কাজ করব।

রেজওয়ানা খান বলেন, সফটওয়্যার রিলেটেড সরকারি বিভিন্ন কাজে সিন্ডিকেট রয়েছে। সেই সিন্ডিকেট যেন না থাকে, সে লক্ষ্যে কাজ করবো। অনেক সময় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছে বা কাজ দিচ্ছে। দেশের কাজগুলো যেন দেশের বাজারেই থাকে, সে লক্ষ্যেও কাজ করব। আমাদের প্যানেলের প্রতিশ্রুতি— এসব সমস্যা সমাধান করা। দেশের সেবা শিল্প খাতে প্রচুর কাজ রয়েছে। এখানকার জন্য দক্ষ জনবল তৈরিতে কাজ করব। অভিজ্ঞ জনবল তৈরি করে সেবা খাতে যেন বাইরে থেকে লোক আনতে না হয়, তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কাজগুলো যেন আমরাই করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করব। সেবা খাতে দেশীয় কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারলে আমাদের কাজের আওতা অনেক বেড়ে যাবে। সেবা খাতে এটি একটি বড় মার্কেট। এই কাজগুলো কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলো নিয়ে যায়। এখানে আমাদের যে জনবলের ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণের চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, সরকারি কাজগুলো অনেক ক্ষেত্রে দেশি কোম্পানিগুলো পাচ্ছে না। সরকারকে একটি নীতিমালা দিতে চাই যেন কাজগুলো দেশেই থাকে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করব। আর যে কাজগুলো দেশি কোম্পানি পাচ্ছে, কয়েকটি কোম্পানিই সেই কাজ করছে। এটি নিয়ে বেসিসের সব সদস্যদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। আমরা সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, আমি চাই তরুণ উদ্যোক্তারা যেন তরুণদের উদ্যোগে এগিয়ে আসে। ব্যক্তিগতভাবে নারীরা যদি নতুন কিছু করতে চায়, তাতে আমি সমর্থন করার চেষ্টা করি। ব্যবসা সম্প্রসারণে কীভাবে কাজ করতে হয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কীভাবে গড়ে তুলতে হয়— এই বিষয়গুলো নিয়েও কাজ করে থাকি। নির্বাচিত হলে নারীরা যেন আরও অভিজ্ঞ হয়ে আইটি খাতে প্রবেশ করতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করব।

বেসিস নির্বাহী পরিষদ ২০২২-২০২৩-এর নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর, গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে সাধারণ ভোটার ৬৫৪ জন, অ্যাসোসিয়েট ১৮২ জন, অ্যাফিলিয়েট ৩৭ জন ও আন্তর্জাতিক ভোটার তিন জন। নির্বাচনে সাধারণ সদস্যপদে লড়ছেন ২৪ জন, অ্যাসোসিয়েট পদে দুই জন, অ্যাফিলিয়েট পদে দুই জন এবং আন্তর্জাতিক পদে একজন। আন্তর্জাতিক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সৈয়দ এম কামাল বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

টপ নিউজ বেসিস নির্বাচন রেজওয়ানা খান স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর