Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ধর্ষণ: আরও ১৬ মামলার আসামি আশিকুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০০:০২

ঢাকা: কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি আশিকুল ইসলাম আশিক। এবারে ধর্ষণ মামলার আসামি হলেও আশিকুলের কক্সবাজার এলাকার চিহ্নিত আসামি। তার নামে কেবল কক্সবাজার সদর থানাতেই রয়েছে ১৬টি মামলা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাসহ চুরি, ডাকাতি, হত্যাচেষ্টা, এমনকি মাদকের মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশ বলছে, এসব মামলায় বেশ কয়েকবার কারাগারে যেতে হয়েছে আশিকুলকে। এর আগের মামলাগুলোর কয়েকটিতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়েছে। সবশেষ দেড় মাস আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন আশিক। এরপর আগের মতোই চাঁদাবাজি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়া এক নারী ধর্ষণের শিকার হন। ওই নারীর অভিযোগ, স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের ধরে তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে তাকে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে একবার এবং জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে দ্বিতীয় দফায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।

এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল জয় প্রকাশ জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ছোটন জিয়া গেস্ট ইনের হোটেল ম্যানেজার। আরও দুই-তিন জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহারভুক্ত আসামির মধ্যে আশিকুল ইসলামের বাড়ি কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকায়। তার বাবা মৃত আব্দুল করিম। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন ধরনের অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে।

আশিকুলের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে চুরির অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৯৯ ও ৪০১ ধারায় একটি মামলা দায়ের হয়। একই বছর দণ্ডবিধির কোডের ১৫৭ ধারায় বেআইনি উপায়ে সমাবেশের অভিযোগে আরেকটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। এ বছরেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের এক মামলায় আশিকুলের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।

এর আগে, ২০১৪ সালে অস্ত্র আইনেও মামলা হয় আশিকুলের বিরুদ্ধে। এছাড়া ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আশিকুলের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়সহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও ছয়টি মামলা দায়ের হয়। ২০১৮ সালে আশিকুলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনেও একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। এর বাইরেওে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধের সঙ্গেও জড়িত এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের সময় হামলার অভিযোগও রয়েছে আশিকুলের বিরুদ্ধে। সবশেষ আজ (বৃহস্পতিবার) ধর্ষণ মামলার আসামি করা হয়েছে তাকে।

জানতে চাইলে কক্সবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। আসামিদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।’ তবে আশিকুলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আগের মামলাগুলো নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এই মুহূর্তে সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

এর আগে, গেছে, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে যান ওই নারী। শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন তারা। সেখান থেকে বিকেলে যান সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। সেখানে অপরিচিত এক তরুণের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়।

ধর্ষণের শিকার ওই নারী জানান, ওই সময় আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেন তিন তরুণ। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন তারা। এরপর তাকে নেওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করেন ওই তিন তরুণ। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুমের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা।

ভুক্তভোগী নারী জানান, পরে জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক তরুণের সহায়তা রুমের দরজা খোলেন তিনি। এরপর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয়। পরে তিনি র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে ওই হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করেন। পরে হোটেলের ম্যানেজারকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র‌্যাব।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, জিয়া গেস্ট ইন হোটেলর ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিন তরুণকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

সারাবাংলা/একে/টিআর

১৬ মামলার আসামি আশিকুল ইসলাম আশিক কক্সবাজারে ধর্ষণ ধর্ষণ মামলা ধর্ষণ মামলার আসামি পর্যটক ধর্ষণ সংঘবদ্ধ ধর্ষণ স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ধর্ষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর