বড়দিনে গির্জায় নিরাপত্তা জোরদার, থাকছে সোস্যাল মিডিয়া পেট্রলিং
২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:৩০
ঢাকা: খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের সকল গির্জায় এরইমধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর সব গির্জায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। যদিও এবার করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের গির্জায় প্রবেশ নিশ্চিতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
ডিএমপি জানিয়েছে, এবার নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী গির্জাগুলোতে থাকবে সাদা ও পোশাকে নিয়োজিত থাকবে ডিবি পুলিশ। গির্জায়সহ অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে ইভটিজিং প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারিতে নিয়োজিত থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বড়দিনের অনুষ্ঠানে নির্বিঘ্ন করতে ও নিরাপদে ধর্মানুরাগীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে গির্জাসমূহে যাতায়াত করতে পারেন সে লক্ষ্যে কিছু নিরাপত্তা নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। ওইসব নির্দেশনা আমরা প্রত্যেকটি গির্জার সংশ্লিষ্টদের পাঠিয়েছি।
ডিএমপি’র প্রত্যেকটি বিভাগকে এব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবারের ক্রাইম কনফারেন্সেও এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি’র নিরাপত্তা নির্দেশনাবলির পাশাপাশি করোনায় সরকারি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালনে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার বড়দিনে গির্জাতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। সেখানে তল্লাশি করা হবে। তল্লাশির মধ্য দিয়েই ঢুকতে হবে আগন্তুক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদেরও। খ্রিস্টান সম্প্রদারের বাইরে যাতে কেউ গির্জায় প্রবেশ করে ঝামেলা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী শনাক্ত করে গির্জায় প্রবেশের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যেকটি গির্জায় নিরাপত্তায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সাইবার পেট্রলিং নিয়মিত কাজ। সাধারণত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান থাকলে একটা গ্রুপ নানাবিধ অপপ্রচার চালায়। হামলা করতে উৎসাহিত করে। এগুলো যাতে এবার না হয় সে জন্য বড়দিনে সাইবার পেট্রলিং বাড়ানো হয়েছে।’
আর ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের বিশেষ টিম কাজ করবে সাদা পোশাকে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট্র এলাকার মোবাইল পার্টি স্ট্যান্ড বাই থাকবে গির্জা এলাকায়।
সাধারণত খ্রিস্টান বা হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকজনও আসে শুভেচ্ছা জানাতে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর ধরে সেটা কমেছে স্বাস্থ্যবিধির কারণে। খ্রিস্টানদের বড়দিনের অনুষ্ঠান যেহেতু গির্জায় হয়, তাই করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত সরকারি স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা কঠোরভাবে পরিপালন করা হবে।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গির্জা এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারে আমাদের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ যাতে নাশকতার চেষ্টা করতে না পারে সেজন্য ডিবি, সিটিটিসির সদস্যরা সতর্কাবস্থায় নিয়োজিত রয়েছে। পাশাপাশি সোস্যাল মিডিয়া পেট্রলিং বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বড়দিনের নিরাপত্তা ব্রিফিং ও নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট এলাকা ও নিয়োজিত কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। গির্জা ও তার আশপাশের এলাকায় সন্দেহজনক কোন ব্যক্তি বা বস্তু পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ পুলিশকে অবহিত করতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে অবগত করতে বলা হয়েছে। গির্জা এলাকায় থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।
বড়দিনের অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থীদেরকে পকেটমার, ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি ও মলমপার্টি সম্পর্কে সতর্ক হয়ে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
সারাবাংলা/ইউজে/একে