প্রেস ক্লাব চত্বরে সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত

ঢাকা: একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের জানাজা জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত জানাজায় উপস্থিত হয়েছিলেন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদসহ নানা অঙ্গনের মানুষ। জানাজা শেষে সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, নোয়াব সভাপতি এ. কে. আজাদ, সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সম্পাদক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ প্রমুখ।

জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানেই মরদেহ দাফন করা হবে।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউতে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

রিয়াজ উদ্দিনের ভাই কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন। তিনি জানান, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ করোনাভাইরাসের আক্রান্ত ছিলেন। ১৮ ডিসেম্বর তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ’তে নেওয়া হয়।

১৯৪৫ সালের ৩০ নভেম্বর নরসিংদীর মনোহরদীতে জন্মগ্রহণ করেন রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। খ্যাতিমান এই সাংবাদিকের সাংবাদিকতা জীবন শুরু ১৯৬৮ সালে, পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায়। তিনি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও দ্য নিউজ টুডে পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। একুশে পদক, মওলানা আকরম খাঁ পদক, অতীশ দীপঙ্কর পদক লাভ করেন তিনি। তার লেখা উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে— ‘সত্যের সন্ধানে প্রতিদিন’, ‘আরব্য রজনী’ ও ‘পারস্য রজনী’।

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সত্তর ও আশির দশকে অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব ও সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ ও ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোট চার মেয়াদে আট বছর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। এছাড়া সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের (সাফমা) সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সদস্যও ছিলেন।

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও দ্য নিউজ টুডে’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ছিলেন।

বরেণ্য সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রখ্যাত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে সাংবাদিকতা পেশার অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তিনি ছিলেন সাংবাদিক সমাজের অভিভাবক।

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে শোক জানিয়েছেন সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নূরুল ইসলাম হাসিব। ডিআরইউ নেতারা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এক বিবৃতিতে গভীর শোক জানিয়েছেন। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

রিয়াজ উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে দেশ এক জন বরেণ্য সাংবাদিককে হারিয়েছে।

সারাবাংলা/আইই

সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন