ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদ স্থায়ী বরখাস্ত
৩০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:৩৭
ঢাকা: কুরিয়ারের মাধ্যমে স্ত্রীর কাছে ঘুষের কোটি টাকা পাঠানোর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) বজলুর রশীদকে চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের শৃঙ্খলা-০১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বজলুর রশীদ ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ডিআইজি প্রিজন্স পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠে আসে। তাতে বলা হয়, স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারের নামে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত মোবাইল সিম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ৩০টি রশিদে মোট ৯৮ লাখ ৩৫০ টাকা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এক জন সাংবাদিক তার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করলেও এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করায় সংবাদে উল্লেখ করা ঘটনায় তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।
এতে আরও বলা হয়, এ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ হওয়ায় বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয় এবং অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানো হয়। বজলুর রশীদ এ সংক্রান্ত শুনানিতে যেসব তথ্য দিয়েছেন, সেগুলো সন্তোষজনক না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডও তদন্ত শেষে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অীভযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত বলে মতামত দেয়।
এরপর বজলুর রশীদকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বছরের ৬ অক্টোবর দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। ১৮ অক্টোবর তিনি এর জবাব দেন। সেই জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গুরুদণ্ড হিসেবে আগের সিদ্ধান্ত, তথা চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত ১ নভেম্বর এ বিষয়ে পরামর্শ দিতে সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) অনুরোধ করা হয়।
পিএসসিও মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করায় তাকে কারা উপমহাপরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) পদ থেকে স্থায়ী বরখাস্তের মাধ্যমে গুরুদণ্ড দেওয়া হলো বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
গুরুদণ্ড পাওয়া ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদ বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর তাকে দুদকে তলব করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কিছু সম্পদের বৈধ উৎস দেখানে না পারায় ওই দিনই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত বছরের ২৬ আগস্ট এই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ আসামির উপস্থিতিতে এ অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। ২২ অক্টোবর মামলাটিতে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১ বছর ৯ দিন কারাগারে থাকার পর গত বছরের ২৯ অক্টোবর জামিন পান বজলুর রশীদ। বর্তমানে মামলার বিচারকাজ চলছে।
আরও পড়ুন-
- ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদ গ্রেফতার
- ডিআইজি প্রিজনস বজলুর রশীদ কারাগারে
- ডিআইজি প্রিজনস বজলুর বিরুদ্ধে চার্জশিট
- বজলুর রশীদের জামিন ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল
- জামিন পেলেন ডিআইজি প্রিজনস বজলুর রশীদ
- আইজি প্রিজনস বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ
- ‘তথ্য গোপন করে’ বজলুর রশীদের জামিন, ফের মেয়াদ বাড়ল
- ডিআইজি প্রিজন বজলুর জামিন নাকচ, চার্জ শুনানি ২২ অক্টোবর
- ‘তথ্য গোপন করে’ বজলুর রশীদের জামিন— বাতিল চেয়ে আদালতে দুদক
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর