‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে সরে গেলে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হবে’
৩১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:০৬
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম-এর উদ্যোগে ‘মুক্তিসংগ্রামের চেতনায় সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে । বৃহস্পতিবার(৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে (২য় তলা, ভিআইপি লাউঞ্জে) এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি এম নজরুল ইসলাম, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশ যেখানে বৈষম্য থাকবে না। আজীবন বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছেন এবং সেই জায়গাটিতে আমরা কোন অবস্থানে দাড়িয়ে আছি , সেই কথাটি মূল্যায়ন করা দরকার। এই সমৃদ্ধি কতটুকু আমাদের জীবনের মানকে বৃদ্ধি করেছে।
বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি বৈষম্যহীন সমাজ, শোষণহীন সমাজ, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সমাজ। এই কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা ছিল সেই জায়গায় আমরা পৌঁছেছি কিনা সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি। এরপরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়নকে ধ্বংস করার জন্য এখনো কাজ করে চলেছে। আমাদের এখন ভাস্কর্য প্রকল্প বন্ধ, তার মানে আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তির কাছে নিজেদের সমর্পণ করছি। আমাদের জীবন যাপন বদলে যাচ্ছে তাদের কথা অনুযায়ী।
তিনি আরও বলেন, এই জায়গাটিতে আমাদের অনেক কাজ করার আছে। আমরা সমৃদ্ধির পথে যাব কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে। আমরা কখনো এই বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করব না। কম্প্রোমাইজ করতে গিয়ে যদি নিজেই বিলীন হয়ে যাই তাহলে সেই কম্প্রোমাইজের দরকার নাই।
শ্যামল দত্ত আও বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা ধর্মকে হাতিয়ার করে রাজনীতি চর্চা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এটা হয়ে যাচ্ছে । মুক্তি সংগ্রামের চেতনা ধারণকারী আওয়ামী লীগের নেতাদের দেখলে মনে হয় তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে না। তারাও তাদের প্রতি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা বিলীন হয়ে যাচ্ছি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ প্রয়োজন। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। বিরোধী শক্তি বারবার আমাদের উন্নয়নের ধারাকে ব্যহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিভাজন ঘটেছে এবং মৌলবাদ ও উগ্রবাদ আগের চেয়ে বেড়ে চলেছে। এই সমস্যা দেশকে উন্নত হতে ব্যাহত করবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ থেকে যদি আমরা সরে যাই তাহলে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত করা সম্ভব হবে না।
সারাবাংলা/আইই