নতুন বছরে মিসাইলে নয়, অর্থনীতি ও খাদ্যে গুরুত্ব দিলেন কিম জং উন
১ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:২০ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:১৫
স্থবির অর্থনীতিতে গতি ফেরানো ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অগ্রাধিকার দেবে উত্তর কোরিয়া। দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ‘মহান জীবন-মৃত্যুর সংগ্রামে’ লিপ্ত হয়েছে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সাধারণত বছরের শেষে বা এরকম গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগান উত্তর কোরিয়ার নেতা। সে সময় নতুন নতুন অস্ত্র বিশেষ করে মিসাইল তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করে থাকেন কিম জং উন। তবে এবারের বক্তব্যে সরাসরি ওই দুই দেশের নাম আসেনি। যদিও কিম জং উন বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল সামরিক পরিবেশের কারণে পিয়ংইয়ং তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে।
বছরের শেষে ক্ষমতাসীন দলের এক সভায় দেওয়া বক্তব্যে কিম জন উন নতুন বছরে জাতীয় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছেন। করোনাভাইরাস মহামারিতে লম্বা সময় স্বআরোপিত অবরোধে ছিল উত্তর কোরিয়া। এতে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি আরও স্থবির হয়ে পড়ে। গোটা দেশে প্রচণ্ড খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তার দেশের কঠিন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেছেন কিম জং উন। তিনি বক্তব্যে বলেন, মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান সমস্যা সমাধানে আমূল অগ্রগতির জন্য জরুরি কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিম জং উন বলেন, মহামারির সঙ্গে লড়াই করা আসন্ন বছরে আমাদের অন্যতম রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার।
চলতি বছরে কয়েকবার কিম জং উন তার দেশের খাদ্য সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে গত ৮ এপ্রিল ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির এক সম্মেলনে কিম জং উন দেশটির চলমান পরিস্থিতিকে ৯০ দশকের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সময়ের সঙ্গে তুলনা করেন। দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মন্দাবস্থার কথা জানিয়ে দলীয় কর্মীদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন কিম জং উন।
এছাড়া গত অক্টোবরে এক সামরিক মহড়ায় সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আর নাগরিকদের জীবনের মান উন্নয়নে ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চাওয়ার সময় উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনকে আবেগাপ্লুত হতে দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু থেকেই নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয় উত্তর কোরিয়া। এর ফলে, দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। এ ছাড়া, পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে দেশটির ওপর কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
কয়েক মাস ধরেই উত্তর কোরিয়া থেকে নাগরিকদের খাবারের জন্য হাহাকারের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে চীন সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকে এই ধরনের খবর আসছে। এসব এলাকার বহু মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস সীমান্ত চোরাচালান।
সারাবাংলা/আইই