চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার
১ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:১৫
ঢাকা: চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তাই নতুন বছরে রেমিট্যান্স প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১ জানুয়ারি) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ’ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় স্মারক অনুষ্ঠানের প্রি-ইভেন্ট সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব বলেন অর্থমন্ত্রী।
এ বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স বাংলাদেশের আর্থসামাজিক এলাকায় বড় ভূমিকা রাখছে। আমরা বৈধ পথেই পুরো রেমিট্যান্স নিয়ে আসতে চাই। সে জন্যই রেমিট্যান্স প্রণোদনা ২ শতাংশ ছিল সেখানে থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে, আজ (শনিবার) থেকে এটি কার্যকর হবে। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।’
রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বৃদ্ধির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমাদের যে রেমিট্যান্স অর্জন করার কথা, তার ৪৯ শতাংশ অর্জন করতাম বৈধ পথে আর বাকিটা আসত অবৈধভাবে। এটিকে বৈধ পথে আনলে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং সবাই এটির উপকার পাবে। সেই চিন্তা থেকে প্রথম ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি। আমাদের গড় রেমিট্যান্স ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার, এই প্রণোদনা দেওয়ার পর প্রথম বছরে রেমিট্যান্স বেড়ে হলো ১৮ বিলিয়ন ডলার। এরপর আমাদের রেমিট্যান্স আরও বেড়ে যায় এবং ২০২০-২১ সালে আমাদের রেমিট্যান্সের পরিমাণ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। একদিকে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করেছি এবং পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে- যা কাজে লেগেছে বলে মনে করি। কারণ রেমিট্যান্স পাঠাতে একটি খরচ করতে হয় সেটি কাভার করতে পারছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। সেটা করতে গেলে দেখলাম আমরা যদি প্রণোদনা আরেকটু বাড়িয়ে দেই তাহলে বর্ধিত যে খরচ তারা সেটি কাভার করতে পারবে।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ থেকে টাকা পাচার হয়, এটা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। আপনাদের (মিডিয়া) থেকে তথ্য নিয়েই আমরা ব্যবস্থা করছি। গত কয়েকদিন আগেও কয়েকটি মামলার রায় হয়েছে, অনেকেই জেলে আছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যেটি সম্ভব তা বাস্তবায়ন করছি। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কে দোষী বা নির্দোষ সেটি কীভাবে প্রমাণ করব? এখন বিদেশে টাকা রাখলে কেউ সেই টাকার ওপর কোনো লাভ পাচ্ছে না বরং দেশে ব্যাংকে টাকা রাখলে লাভ দিতে হয়।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমদানি বাড়বে, এটি বাড়া ভালো। আমদানি বাড়লে রফতানিও বাড়বে। আমরা যতই রফতানি করি তার বেশির ভাগই আমদানি খাতে চলে যায়। তবুও আমাদের রফতানি বাড়াতে হবে, আমরা সেই কাজটি অব্যাহত রেখেছি। আমরা কয়েকটি খাতকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। সেখানেও বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা দিয়ে থাকি। এগুলোর মূল কথাটা হলো একটু সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের টাকা যারা যেখান থেকে অর্জন করুক দেশে আসুক। দেশে আনার জন্য যা যা বাস্তবায়ন করা দরকার আমরা করব।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ আমাদের যে স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে কিন্তু এ ধরনের প্রশ্ন ছিল না। আমাদের ইকোনমিক ইনডেস্ক বিবেচনা করা হয়েছে এবং সেই বিবেচনায় আমাদের মাথাপিছু আয়সহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করেই আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য তারা বিবেচনা করেছে। আমারা কাঙিক্ষত লক্ষ্যপথেই আছি বলে মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করব। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের স্বপ্ন পূরণ করা, ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাব। আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে সেই সময় পৃথিবীর ২০টি উন্নত দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। এ অর্জন আমরা করবই করব।’
সারাবাংলা/জিএস/এনএস