Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভোলার দুই ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের নির্বাচনি কর্যালয়ে আগুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২ জানুয়ারি ২০২২ ২১:২৩

ভোলা: সদর উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধনিয়া ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারীরা অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

অপরদিকে ওই উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টার দিকে এ হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে কে বা কারা এ হামলা করেছে তা না দেখলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের দাবি প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীরাই এ হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

ধনিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এমদাদ হোসেন কবির জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট আলগী গ্রামে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে নেতাকর্মী ও স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি চলে আসেন। পরে ওই অফিসে রাত ১২টা পর্যন্ত তার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পর রাত তিনটার দিকে স্থানীয় লোকজন অফিস ভাঙচুরের আওয়াজ শুনে এগিয়ে এসে দেখতে পান ৫-৭ জন হেলমেট ও মুখোশ পড়া লোক বগি দা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অফিসে ভাঙচুর চালায়। পরে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নেভায়। এসময় হামলাকারীরা তার অফিসের ৫০টির বেশি চেয়ার, একটি টেবিল, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে এবং অফিসের চারদিকের বেড়াগুলো বগি দা দিয়ে কুপিয়ে নষ্ট করে।

বিজ্ঞাপন

তিনি দাবি করছেন, তার প্রতিপক্ষ আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফেরদাউস বাহাদুর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এ হামলা করিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদাউস বাহাদুর গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর জাময়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের দিয়ে এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে একটি মিছিল করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

অপরদিকে সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাওলাদার বাজার এলাকায় একদল সন্ত্রাসী বাহিনী তার নির্বাচণী কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় হামলাকারীরা তাঁর অফিসের ৫০টির অধিক চেয়ার, দুইটি টেবিল ও দুইটি সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে। কে বা কারা এ হামলা করেছেন তা না দেখলেও তিনিও দাবি করছেন প্রতিপক্ষ আনারস প্রতিকের স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিনের সমর্থকরা এ হামলা করেছেন।

এদিকে দুই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদাউস বাহাদুর ও গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নৌকা প্রতীকের লোকজনই নির্বাচনকে বানচাল করতে নিজেদের অফিস নিজেরা ভেঙে আমাদেরকে মিথ্যা দোষারোপ করছেন।

এছাড়াও সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনটি ঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত স্থানীয় আলাউদ্দিন, রুবেল ও মমতাজের বসতঘরে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীরা ঘরের টিনের বেড়াগুলো কুপিয়ে নষ্ট করে ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীদের ভয়ে ঘরের লোকজন পাশ্ববর্তী বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ওই ওয়ার্ডের টিউবওয়েল প্রতিকের সদস্য প্রার্থী ওহাব আলীর অভিযোগ, তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোরগ প্রতিকের প্রার্থী আব্দুস সলামের সমর্থকরা এ হামলা করেছেন। তবে আব্দুস সালাম অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি ভোলা সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে দুই একটি ইউনিয়ন বাদে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় বিদ্রোহীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও তারা নির্বাচন থেকে সরে আসেনি। এতেই দিন দিন উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভোলার নির্বাচনী মাঠ।

সারাবাংলা/এসএসএ

নৌকা প্রতিকের নির্বাচনি কর্যালয়ে আগুন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কোস্ট গার্ডের নতুন ডিজি জিয়াউল হক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩২

সম্পর্কিত খবর