কোচাশহরে উৎপাদিত শীতের পোশাক যাচ্ছে সারাদেশে
৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:৩৯
গাইবান্ধা: জমে উঠেছে জেলার গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহর হোসিয়ারি পল্লী। শীত বাড়তে থাকায় দেশে চাহিদা বাড়তে থাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। লাল, নীল, সবুজ ও হলুদসহ নানা রঙের সুতো দিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে এখানে নিপুন হাতে তৈরি করা হয় বিভিন্ন ডিজাইনের শীতের পোশাক। যার চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। এই পল্লীর মানুষের সকাল শুরু হয় মেশিনের খটখট শব্দে। পূর্ব পুরুষদের এই পেশাকে এখনো ধরে রেখেছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোবিন্দগঞ্জের কোচাশহর, মহিমাগঞ্জ ও শালমারা ইউনিয়ন। এই তিন ইউনিয়নের অন্তত ৭০টি গ্রাম জুড়ে গড়ে উঠেছে হোসিয়ারি শিল্প। কাজ করেন অন্তত ১১ হাজার কারিগর। ঘরে ঘরে গড়ে ওঠা কারখানায় দিনরাত চলে খুটখাট শব্দ। কেউ চরকায় সুতা কাটে, কেউ রঙ করেন। যা দিয়ে সোয়েটার,মোজা, কার্ডিগান, মাফলার, টুপি ও বাচ্চাদের বিভিন্ন ডিজাইনের শীতের পোশাক তৈরি করা হয়। নারী-পুরুষ মিলেই এ কাজ করেন। আর এতেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে এলাকার মানুষের। গ্রাম জুড়ে একজন বেকার মানুষও মিলবে না। শীত আসায় হাতে সময় কম, গ্রাম জুড়ে কর্মব্যস্ত নারী পুরুষ।
জানা গেছে, পাকিস্তান আমলে এই এলাকার মহিমা আলী নামের এক ব্যক্তি ঢাকায় সোয়েটার বানানোর কাজ করতেন। পরে গ্রামে গিয়ে নিজেই এই কাজ শুরু করেন তিনি। তারপর থেকে আস্তে আস্তে হোসিয়ারি শিল্পের গ্রামে পরিণত হয়। সোয়েটার তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে এখানকার মানুষ। দেশের নানা প্রাপ্ত থেকেও অনেকে আসে কাজে। প্রতিদিন কাজ করে ৬ ০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করেন শ্রমিকরা। শীতে কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয় এখানে। এই কারখানাকে কেন্দ্র করে এখানে মার্কেট গড়ে উঠেছে। স্থানীয় মার্কেটের দোকানে বিক্রিয় ছাড়াও এখানকার তৈরি শীতের পোশাক ঢাকা, কেরানীগঞ্জ , রংপুর , বগুড়া, সৈয়দপুরসহ দেশের সব এলাকাতে নিয়ে যায় পাইকাররা।
নয়ারহাট এলাকার কারখানা মালিক ইকবাল হোসেন বলেন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও সরকারিভাবে কম সুদে ঋণ সহায়তা দেওয়া হলে এই শিল্পের আরও বিকাশ ঘটবে।
বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য কোচাশহর হোসিয়ারি পল্লী এলাকায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ব্যবসায়ীদের ঝুঁকিমুক্ত করতে ব্যাংক স্থাপন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা বিসিক’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবিন চন্দ্র রায় বলেন, বিসিক’র পক্ষ থেকে কোচাশহরের কারখানা মালিকের উন্নয়নে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হলে এই শিল্পের আরও প্রসার ঘটবে।
সারাবাংলা/এনএস