লালমনিরহাটে থানায় ‘মৃত্যু’র ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্যের কমিটি
৯ জানুয়ারি ২০২২ ২০:২০
লালমনিরহাট: হাতীবান্ধায় স্ত্রীর মৃত্যুর কারণ জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়ার পর আসামির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদিও নিহতের পরিবারের দাবি, থানায় নেওয়ার পর পুলিশ এক লাখ টাকা দাবি করেছিল। সেই টাকা না দেওয়াতেই পিটিয়ে হত্যার পর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাচ্ছে পুলিশ।
তদন্ত কমিটিতে লালমনিরহাট পুলিশের ‘এ সার্কেলে’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা জামানকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম ও কোর্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর আলম।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই কমিটি ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আটক হিমাংশু রায়ের আত্মহত্যার কারণ ও ওই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিলো কিনা তা খুঁজে দেখবে এই কমিটি।
জানা গেছে, হাতিবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ জানতে হিমাংশু রায় নামে এক স্বামীকে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুমে একা রাখলে সেই স্বামী আত্নহত্যা করেন এমন দাবি পুলিশের। পরে শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য হিমাংশুর মরদেহ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মৃত হিমাংশুর বাবা বিশ্বেশ্বর রায় অভিযোগ করে বলেন, ‘থানা পুলিশ থেকে এক লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়াতেই পুলিশ পিটিয়ে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।’
স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় আটক স্বামী মারা গেলেন পুলিশ হেফাজতে
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, ‘ওই এলাকার বিশেশ্বর রায়ের ছেলে হিমাংশু রায়ের বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় স্ত্রী সবিতা রানীর। পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ মৃত্যুর কারণ জানতে ওই নারীর স্বামী হিমাংশু রায়কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানার একটি রুমে রাখা হয়। সেই রুমে হিমাংশু রায় আত্নহত্যার চেষ্টা করেন। টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’
হাতীবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিরন্ময় বর্মণ সাগর বলেন, ‘হিমাংশু রায়কে হাসাপাতালে নিয়ে আসার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হিমাংশুর মৃত্যু হয়েছে আত্মহত্যা করে। তার গলায় দাগ পাওয়া গেছে।’
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হিমাংশু রায়ের আত্নহত্যার কারণ জানতে ও ওই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিলো কি না তা দেখতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও