লোভের ফাঁদে ‘টপ সয়েল’ বিক্রি, উর্বরতা হারাচ্ছে জমি
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:৪৯
দিনাজপুর: সার, বীজ, জমি চাষ ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে হাকিমপুর-হিলি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে ফসলি জমির টপ সয়েল (মাটির উপরের উর্বর অংশ) বিক্রির ধুম। এতে জমির উর্বরতা হারানোর সাথে হারাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতা, কমে যাচ্ছে ফলনের পরিমাণ।
সরেজমিনে হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি কেটে কেউ পুকুর খনন করছেন, আবার কেউ কেউ মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব জমির টপ সয়েল অর্থাৎ জমির উর্বর অংশ কেটে নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট ভাটা, নিচু জায়গা ভরাটের কাজে। ট্রাক্টর এবং বিভিন্ন মাধ্যমে এসব মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে কিছু জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। আর এতে ফসল কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, ‘দুই তিন বছর জমির ফসল হবে না, সেটা আমরা জানি। কিন্তু এই মাটি দিয়ে বাড়িতে নিচু জায়গা ভরাট করতে হবে। সবকিছু জেনেই মাটি বিক্রি করি বা নিজের কাজে ব্যবহার করে থাকি।’
গোহাড়া গ্রামের কৃষক বাদল বলেন, ‘আমাদের জমির পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এতে করে তাদের জমিতে যেমন ফসল কম হবে তেমনি আমাদের জমিতেও ফসল কম হবে। এছাড়াও আমাদের জমির পানি সম্পূর্ণ নেমে যাবে নিচের জমিতে। আমরা মাটি খননে তাদের বাধা দিলে শোনে না। কারণ মাটি বিক্রি করে তারা টাকা পাচ্ছে।’
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, ‘জমি টপ সয়েল বা জমির উর্বর অংশ কেটে নিলে সেই জমিতে ফসলের পরিমাণ কম হয়, এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় কৃষকরা না বুঝে লোভে পড়ে এই অংশ বিক্রি করে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর এ আলম বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন থেকে কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রির একটা অভিযোগ পাচ্ছি। আমরা এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বেশ কয়েকজনকে আইনের আওতায় এনেছি। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের সচেতন করতে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা চালাচ্ছি যাতে তারা কৃষি জমির টপ সয়েল বিক্রি না করে।’
সারাবাংলা/এমও