Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএসএমএমইউ’র সিকোয়েন্সিংয়েও ডেল্টার প্রভাব, বাড়ছে ওমিক্রনও

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১১:৪১

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে এখন পর্যন্ত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব বেশি মাত্রায় দেখা গেছে। তবে একইসঙ্গে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিও বাড়ছে। বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরে কোভিড-১৯ সংক্রমিতের নমুনা সিকোয়েন্সিংয়ে শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনার সিকোয়েন্সিং থেকে দেখা গেছে, ডেল্টার তুলনায় তুলনামূলকভাবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের ফুসফুসে কম সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, ওমিক্রনে সংক্রমণের মাত্রা কম ভেবে একে সহজভাবে নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। আর তাই অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরতে হবে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।

বিএসএমএমইউ’র কোভিড-১৯ নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ডেল্টার প্রাদুর্ভাব রয়েছে দেশে। তবে ওমিক্রনের সংখ্যাও বাড়ছে নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে।

বিএসএমএমইউ থেকে অবশ্য এখনো এই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এসব জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফল ঘোষণা করবেন প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নমুনা সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য বলছে, গত ১৪ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন (বিএ.১ লিনেজ) শনাক্ত হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়েও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ডিসেম্বর নয়, গত নভেম্বর মাসেই দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল। তার আগে সরকারিভাবে জানানো হয়, দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয় গত ৬ ডিসেম্বর সংগ্রহ করা দুইটি নমুনায়।

জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট জিনব্যাংকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ওয়েবসাইটে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের তথ্য প্রকাশিত করা হয়। বিএসএমএমইউয়ে সিকোয়েন্সিং করা সেই নমুনাটি সংগ্রহ করা হয়েছিল গত ১৪ নভেম্বর।

ওয়েবসাইটের তথ্য আরও বলছে, ১৪ নভেম্বরই কেবল নয়, এর পরে সংগ্রহ করা আরও নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়েও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছে বিএসএমএমইউ।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে সর্বপ্রথম ২ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সংগ্রহ করা একটি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। তবে এই সিকোয়েন্সিং ফল জিআইএসএইডে আপলোড করা হয় ২৯ ডিসেম্বর। জিআইএসএইডে সর্বপ্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি আপলোড করা হয় ২২ নভেম্বর। হংকং থেকে ১৩ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বলে ঘোষণা দেয়।

১১ জানুয়ারি বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নিয়েও অনেকে করোনার ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হবে না, এমনটি বলা যাবে না। বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও কেউ কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। তাও এটা নিতে হবে। কারণ ভ্যাকসিন নিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ছাড়াও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হলে রোগীর জটিলতা কম থাকে এবং মৃত্যু ঝুঁকিও কম থাকে।

তিনি বলেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর হার কম, এখনো সেটি বলারও সুযোগ নেই। ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে উল্টো শারীরিক নানা জটিলতা দেখা যেতে পারে। কাপড়ের মাস্ক পরা ভালো, সার্জিক্যাল মাস্ক আট ঘণ্টা পর ফেলে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। ওমিক্রনের সংক্রমণ হার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্ট থেকে কয়েকগুণ বেশি। তবে ভয় না পেয়ে সচেতন ও সতর্ক হয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে, টিকাও নিতে হবে।

বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। দেশের সবাইকে এসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। নাক মুখ ঢাকা মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

তিনি বলেন, যারা ডায়াবেটিস, ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত; হার্ট, কিডনি, লিভারে সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য ওমিক্রন অবশ্যই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যারা মৃত্যুঝুঁকি আছে এমন রোগে অর্থাৎ কো-মরবিডিটিতে ভুগছেন তাদেরকে অধিকমাত্রায় সতর্ক হতে হবে। বেশি বয়স্কদের যতটা সম্ভব বাইরে না যাওয়াই ভালো এবং ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।

সারাবাংলা/এসবি/এএম

ওমিক্রন ডেল্টা বিএসএমএমইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর