গত বছর হত্যা-নির্যাতনের শিকার ৩৮ গৃহশ্রমিক
২৩ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:৪৬
ঢাকা: ২০২১ সালে ৩৮ জন গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ১২ জন নিহত, ২৪ জন আহত এবং ২ জন আত্মহত্যা করেছেন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিলস।
বিলস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৪ জন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন এবং ৮ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৫ জন, ছুরিকাঘাতের শিকার ৫ জন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন, যৌন নিপীড়নের শিকার ১ জন এবং ধর্ষণ পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করেন ১ জন। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রের বাইরে ৩ জন গৃহশ্রমিক নিহত হন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ৪৪ জন গৃহশ্রমিক। যার মধ্যে ২০ জন নিহত, ২৩ জন আহত এবং ১ জন নিখোঁজ ছিলেন ।
ঢাকাসহ সারাদেশে যারা গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করে তাদের ৯৫ ভাগেরও বেশি নারী। বিলস্ এর জরিপে দেখা গেছে যারা হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তাদের অধিকাংশের বয়স ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।
বিলস্ এর এই হিসাব দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তির ওপর নির্ভর করে করা কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কারণ অনেক নির্যাতনের ঘটনায় অর্থ ও চাপের মুখে সমঝোতা করা হয়। গৃহকর্মী বা তাদের পরিবারের সদস্য অর্থনৈতিকভাবে দুবর্ল হওয়ার কারণে মামলা মোকদ্দমায় যেতে চান না বা যেতে সাহন পান না। অনেক সময় প্রভাবশীলরা নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে ফেলেন।
বিলস্ সুনীতি প্রকল্প এবং গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে এই সমস্ত ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া মনিটরিং সেলের মাধ্যমে ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা, ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে যোগাযোগ এবং সার্বিক সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
গৃহশ্রমিক নির্যাতন প্রতিরোধে বিলস্ গৃহশ্রমিক কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা ২০১৫ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্ববান, গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ প্রদান করছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে