বীর মুক্তিযোদ্ধা পৌর মেয়রকে মারধরের মামলায় গ্রেফতার ২
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ১৬:৫৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘এমপিকে গালি দিয়েছিস কেন, এমপির বিরোধিতা করেছিস কেন?’— এমন বলতে বলতে চট্টগ্রামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পৌর মেয়রকে মারধরের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে র্যাবের একটি টিম কক্সবাজারের রামু উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার দু’জন হল- মিনারুল ইসলাম (৩৫) ও মো. সিরাজ (৩৫)। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আরও দুই আসামি এখনও পলাতক আছেন।
গত ১৮ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে বাঁশখালী পৌরসভার মিয়ার বাজার এলাকায় উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হীরা মণির বাসায় চারজন ঢুকে অতর্কিতে হামলা করেন পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হকের (৭৫) ওপর। পরদিন মেয়র বাদD হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-৭’র চান্দগাঁও ক্যাম্প কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পৌর মেয়রের ওপর হামলার পরপরই চারজন পালিয়ে যায়। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দু’জনের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেফতারের পর আমরা তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’
আরও পড়ুন: এমপির বিরোধিতা করেছিস কেন?— বলেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মেয়রকে মারধর
হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজর মেহেদী বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তারা ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে পৌর মেয়রের ওপর হামলার কথা বলেছে। তাদের কেউ হামলার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বলে স্বীকার করেনি। চারজনই মেয়রের পরিচিত। পৌর ভবনে তাদের যাওয়া-আসা ছিল। তারা কোনো কারণে মেয়রের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল। যেহেতু তিনি আর মেয়র থাকছেন না, তিনি ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছেন ধরে নিয়ে এই চারজন প্রতিশোধ নিতে হামলা করে।’
গত ১৭ জানুয়ারি বাঁশখালী পৌরসভার নির্বাচন হয়েছে। পৌরসভা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী এবার দলের মনোনয়ন পাননি। নৌকা প্রতীক পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন অ্যাডভোকেট এস এম তোফায়েল বিন হোসাইন, তিনি চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনে তোফায়েলকে সমর্থন করেননি বর্তমানে মেয়র পদে থাকা সেলিমুল, নতুন মেয়র দায়িত্ব নিলে যার মেয়াদ শেষ হবে।
হামলার জন্য শেখ সেলিমুল হক নতুন পৌর মেয়র এস এম তোফায়েল বিন হাসানকে দায়ী করেছিলেন। সেলিমুলের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি যুব মহিলা লীগ নেত্রী হীরা মণির বাসায় চায়ের দাওয়াতে গিয়েছিলেন। তিনি ওই বাসায় যাবার কিছুক্ষণের মধ্যে বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। কিছুক্ষণ পর চারজন ভেতরে ঢোকে মেয়রকে বলে, তুমি এখন এখান থেকে নেমে যাও। মেয়র বলেন, ‘কেন নামব?’ তখন তারা ‘তুই এমপির বিরোধিতা করেছিস, এমপিকে গালাগালি করেছিস’— এসব বলতে বলতে শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে তাকে মেঝেতে ফেলে দেয়। এরপর চারজন মিলে তাকে মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মেয়রকে উদ্ধার করে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম