Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনার কারণে উত্তরবঙ্গে মঙ্গা শব্দটি নিশ্চিহ্ন: শেখ পরশ

সারাবাংলা ডেস্ক
২৮ জানুয়ারি ২০২২ ১৭:২০

ঢাকা: কোনো অজানা কারণে কখনোই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি অতীতের কোনো সরকার। শুধুমাত্র শেখ হাসিনা সরকারই উত্তরবঙ্গের মানুষের কথা চিন্তা করে। তাদের সুখ-শান্তি ও জীবনমান উন্নয়নের কথা ভাবে। শেখ হাসিনার কারণে উত্তরবঙ্গে মঙ্গা শব্দটি আজ নিশ্চিহ্ন।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানী মডেল স্কুল মাঠে অসহায়-দুঃস্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এসব কথা বলেন।

এসময় রংপুর বিভাগের ৯টি জেলা শাখার নেতৃবৃন্দের কাছে রংপুর অঞ্চলের শীতার্ত মানুষের জন্য কম্বল হস্তান্তর করা হয়। বনানী মডেল স্কুল মাঠে প্রায় ১০০০ অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝেও কম্বল বিতরণ করে যুবলীগ।

তার বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, সোনার বাংলা কায়েম করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী এনেছিলেন। যেটি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ হিসেবে পরিচিত। অনেকে বাকশাল হিসেবেও জানে। কিন্তু আমরা ভুলে যাই এই দ্বিতীয় বিপ্লবের অন্তর্মূলের তাৎপর্য। এর মূলে ছিল মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় করা, ন্যায়পরায়ণ সমাজব্যবস্থা কায়েম এবং মানবিকতা। আমরা চতুর্থ সংশোধনী বা বাকশাল নিয়ে কেউ কেউ বিব্রত বোধ করি, কেউ কেউ এড়িয়ে যেতে চাই। কিন্তু বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার বিষয় নয়।

পরশ বলেন, দ্বিতীয় বিপ্লব আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রথমত, বঙ্গবন্ধু বাকশাল বা তার দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন জাতীয় সংসদের বিপুল ভোটে পাশ করে। সামরিক ফরমান জারি করেও করেননি বা হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমেও নয়। বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করার কারণও ব্যাখ্যা করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, ‘ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস, সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করলাম, কত জেল খাটলাম, আর এখন এক পার্টি করতে যাচ্ছি। আমি এটা চাইনি। বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে। অন্য কোনো পথ খোলা না দেখে আমি স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের নিয়ে সমমনাদের একটি রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে বাকশাল গঠন করেছি। আমি সমাজতন্ত্রবিরোধী, ধর্মনিরপেক্ষতাবিরোধী এবং সর্বোপরী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো দল বা ব্যক্তিকে বাকশালে নেব না। আরও একটি কথা, আমার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নয়, দেশকে বাঁচানোর জন্য এই পদক্ষেপ। আমি ক্ষমতা অনেক পেয়েছি, এমন আর কেউ পায়নি। সেই ক্ষমতা হলো জনগণের ভালোবাসা ও নজিরবিহীন সমর্থন। আমার এই একদলীয় ব্যবস্থা হবে সাময়িক। দেশটাকে প্রতিবিপ্লবের হাত থেতে রক্ষা করে আমি আবার গণতন্ত্রে ফিরে যাব। মনে রাখতে হবে, বিশ্ব এখন দুই ভাগে বিভক্ত; শোষক আর শোষিত। চেষ্টা করব আমার গণতন্ত্র যেন শোষকের গণতন্ত্র না হয়। আমার দুঃখী মানুষ যেন গণতন্ত্রের স্বাদ পায়। আমার গণতন্ত্র পশ্চিমা গণতন্ত্রের মতো বৈষম্যমূলক এবং শোষণের হাতিয়ার হবে না।’

শোষিতের গণতন্ত্রই ছিল বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য—এ কথা বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছেন উল্লেখ করে পরশ বলেন, শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটা ছিল তার দ্বিতীয় বিপ্লব। তাকে হত্যা করার পর বিবিসি এক সংবাদ ভাষ্যে বলেছিল: ‘পৌনে দুই’শ বছরের ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের পর এই প্রথম শেখ মুজিব এক নতুন ধরনের স্থানীয় সরকারভিত্তিক শাসনকাঠামো গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান রংপুরবাসীর উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে রংপুরকে বাংলাদেশে ৭ম প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। ৮টি জেলা, মোট ৩৩টি নির্বাচনি আসন নিয়ে আমাদের রংপুর বিভাগ। রংপুর বিভাগীয় সদর দফতর সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এই বিভাগীয় সদর দফতরে প্রতিবন্ধীসহ সাধারণ জনগণ অনন্য সেবা পাচ্ছেন।

রংপুর বিভাগকে একসময় মঙ্গা কবলিত ও পশ্চাৎপদ ভাবলেও গত ১৩ বছরে সে অবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে বলে দাবি করে শেখ পরশ। তিনি বলেন, রংপুর বিভাগ এখন খাদ্য-শস্য উদ্বৃত্ত একটি অঞ্চল। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে ও দিকনির্দেশনার ফলে আজ এই বিভাগের অভাব দুর হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করা হচ্ছে এবং ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইলের কাজ চলছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, মোঃ সোহেল পারভেজ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এ্যাড শেখ মোঃ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল, সহ-সম্পাদক জামির আহমেদ, মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ আজিজুর রহমান সরকার, মোঃ আলমগীর হোসেন শাহ জয়, মোঃ রাশেদুল ইসলাম সাফিন, মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ, কার্যনির্বাহী সদস্য এ্যাড. মোঃ নাজমুল হুদা নাহিদ, মোঃ আব্দুর রহিম ভূইয়া, প্রফেসর ড. ইঞ্জি. তানভীর ফেরদৌস সাইদ, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আসাদুল্লা তুষার, ড. মোঃ রায়হান সরকার নিজভীসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন জেলার নেতৃবৃন্দ।

সারাবাংলা/আইই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর