‘হাবীবের মৃত্যুর কারণ তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে’
২৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৮:৩৪
ঢাকা: সাংবাদিক হাবীবের প্রকৃত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের অকাল মৃত্যুতে আয়োজিত শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন। শোকসভাটির আয়োজন করে ডিআরইউ।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘হাবীবের মৃত্যু কীভাবে হলো তা দ্রুত তদন্ত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে আমি আজই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলব। তারা যেন দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করেন। প্রতিবেদন আসার পর দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেও এখন হাবীবের জন্য কিছু করতে পারব না। ফলে আমাদের সবাইকে হাবীবের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা হতাশ হবেন না, জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক বান্ধব নেত্রী। তিনি সময় পেলেই সাংবাদিকদের সঙ্গে বসেন। প্রধানমন্ত্রী থাকতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আমরা হাবীবের স্ত্রী ও ভাইয়ের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি হাবীবের পরিবার যাতে দ্রুত আর্থিক সহায়তা পায় সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘হাবীব বিনয়ী ছেলে ছিল। তার মাঝে নেতৃত্বের একটি আকাঙ্ক্ষা ছিল। বীবের মৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত প্রকাশ হওয়া উচিত। সাংবাদিকদের বেলায় কেন রিপোর্টগুলো দেরিতে আসে? এটা বোধগম্য নয়।’ এটি যেন সাগর রুনির মতো না হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ডিআরইউর সাবেকে সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সহকর্মীর প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে হবে। হাবীব একজন বিনয়ী মানুষ ছিলেন। আমরা একসঙ্গে আওয়ামী লীগ বিট কাভার করতাম। তার মৃত্যুতে শোক জানানোর ভাষা নেই। আমি তার স্ত্রীর ও ভাইয়ের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি জানাই।’
ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘হাবীবের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করেছিলাম। যারা তদন্ত করছেন এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। হাবীবের মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাই।’
শোক সভায় হাবীবের বাবা বলেন, ‘আমার বলার ভাষা নেই। বাবা হয়ে ছেলে লাশ কাঁধে নেওয়া যে কি বেদনা, এটা বলে বুঝানো যাবে না। তবে আমার ছেলের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। সে কীভাবে মারা গেলে, তা জানতে চাই।’
ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কাছে ছাত্রের জন্য শোকসভা স্মৃতিচারণ করা সত্যি বেদনাদায়ক। হাবিব সব সময় সত্যকে তুলে ধরেছেন। আমি আশা করব আগামীতে সব সাংবাদিক সংগঠন তার পরিবারের পাশে থাকবেন।’
ডিআরইউ‘র সাবেক সভাপতি সাংবাদিক শাহজাহান সরদার বলেন, ‘হাবীবের পরিবার যাতে ভালোভাবে চলতে পারে সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।’
ডিউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘হাবীবকে ভালো রাখতে হলে তার পরিবারকে ভালো রাখতে হবে। আর এই চেষ্টাটুকু আমাদের করতে হবে।’
ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘হাবীবের মৃত্যু স্বাভাবিক দুর্ঘটনা না কি অন্যকিছু, আমরা এই রহস্যর উদঘাটন চাই।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দ্বীপ আজাদ বলেন, ‘এই ঘটনা নিয়ে কিছু কথা এসেছে। আমরা চাই এটার সুষ্ঠু তদন্ত। আমরা জানতে চাই হাবীবের মৃত্যু এটি দুর্ঘটনা না কি অন্যকিছু।’
হাবীবের স্ত্রী হাসি বলেন, ‘হাবীবের মৃত্যু নিয়ে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে এটা নিয়ে আমার একার পক্ষে কিছু করার নেই। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। হাবীব নেই বিশ্বাস করতে পারি না। হাবীবকে কেউ ভুলে যাবেন না।’
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন বলেন, ‘হাবীবের পাশে আমরা সবাই থাকব। গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগ একটি পরিবার। সবসময় সবার পাশে থাকে। তার পাশেও থাকবে।’
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘হাবীবের মৃত্যুর খবরে আমি হতবাক হই। তার অকাল মৃত্যু কখনই প্রত্যাশা ছিল না। হাবীবের প্রাণোচ্ছ্বল এনার্জি ছিল। সে সবসময় যোগাযোগ রাখতো। হাবীবের মৃত্যু নিয়ে কোনো গলদ থেকে থাকলে এটা আমাদের দেখতে হবে।’
শোক সভায় আরও বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, মশিউর রহমান, রাজু আহমেদ, ডিআরইউ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ শারমীন ও অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম
