বিচারপ্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
৩০ জানুয়ারি ২০২২ ২০:৫১
কিশোরগঞ্জ: আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিচারপ্রার্থীরা যেন কোথাও হয়রানির শিকার না হন, সেদিকেও বিচারক ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারপ্রার্থী মানুষ আপনাদের কাছে আসে তাদের সমস্যার সমাধানে ও ন্যায় বিচার পেতে সহায়তার জন্য। তাই তারা যেন কোনোভাবে কোনো ধরনের হয়রানি বা ভোগান্তির শিকার না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে— এ কথার পরিবর্তে ‘বিচারের বাণী বৃথা যাবে না’ স্লোগানকে সামনে রেখে সততা ও দৃঢ়তার সঙ্গে বিচার বিভাগ ও সংবিধানকে সমন্বিত রেখে কাজ করে যেতে হবে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলার নবনির্মিত ১২ তলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের উদ্বোধন এবং জেলা আইনজীবী সমিতির ভবন নির্মাণ কাজের ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
কিশোরগঞ্জে রাষ্ট্রপতির পক্ষে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মো. সায়েদুর রহমান খান। এ সময় কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের নির্মাণকাজেরও শুভ সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনে সভাপতিত্ব করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে দ্রুত সময়ে রায় দেওয়ার উপায় বের করতে হবে। দেশে শুধু আইনের শাসন নয়, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো, প্রশিক্ষণ ও এজলাস সংকট নিরসনের পাশাপাশি মামলা ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো এবং প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোসহ বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এরই অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জে অত্যাধুনিক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
দরিদ্রদের আইনি সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, দরিদ্র-অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সরকারিভাবে আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলা সদরে এবং সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গরীব ও অসহায় লোকজন আইনি সহায়তা পাচ্ছে।
আদালতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এখন দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অনুসঙ্গ। করোনা মহামারিকালে দেশের মানুষ যেন বিচারিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে দেশের সব আদালতে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বিষয়ে বিশেষ অধ্যাদেশ জারির মতো যুগান্তকারী পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, কিশোরগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহ আজিজুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর
কিশোরগঞ্জ আদালত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ