বিএবি-এবিবি’র কাছে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ৬ অনুরোধ
৩০ জানুয়ারি ২০২২ ২২:২৮
ব্যাংকগুলোর কাছে ছয় দফা অনুরোধ জানিয়েছে ব্যাংককর্মীদের সংগঠন ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)। বেসরকারি তফসিলি ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এবং ব্যাংক মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) কাছে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট কাজী মো. শফিকুর রহমানের সই করা এক চিঠিতে এসব অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক এই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সই করা চিঠিতে বলাহয়েছে, দেশের ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উদ্যোক্তা পরিচালক ও পরিচালনা পর্ষদ, শেয়ারহোল্ডার, কর্মকর্তা/কর্মচারী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফলে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, নীতিনির্ধারণী ভূমিকা, সহযোগিতা ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ ব্যাংকিং কার্যক্রম তথা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য অত্যাবশ্যক।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব অংশীজনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার কারণেই উন্নত অনেক দেশের মতো বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে আজ পর্যন্ত কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। যেমন— কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়নি বা একটি ব্যাংকের সঙ্গে আরেকটি একত্রীকরণ (Merger) হয়নি। এমনকি কোভিড-১৯-এর প্রভাবেও আমাদের ব্যাংকিং খাত সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতার সঙ্গে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এর মূল কারণ উল্লেখিত অংশীজনদের যথাযথ ভূমিকা ও সম্মিলিত সহযোগিতা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯-এর প্রভাবে গ্রাহকদের ব্যবসায়িক মন্দা বিবেচনায় তাদের বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা দেওয়ার জন্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে ব্যাংকের দেওয়া ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ ও শ্রেণিকরণ নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার ইস্যু করেছে। ফলে ব্যাংকগুলো ২০২০ ও ২০২১ সালে আশানুরূপ মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যু করা বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ২০/০১/২০২২ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমরা আশা করি, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনায় সার্বিক বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত, বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের বিষয় বা মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় সময়ে সময়ে সরকারি, বেসরকারি বা ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করে পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়, কর্মপরিবেশ সুন্দর হয় এবং সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের ইপ্সিত লক্ষ্য অর্জনে সুফল বয়ে আনে।
এ পরিপ্রেক্ষিতেই ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ছয় দফা অনুরোধ জানানো হয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের প্রতি। এগুলো হলো—
১. বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যু করা বিআরপিডি ২ নম্বর সার্কুলার (তারিখ ২০/০১/২০২২) এবং ২১ নম্বর সার্কুলার (তারিখ ১৬/০৯/২০২১) যথাসম্ভব দ্রুত বাস্তবায়ন করা;
২. বেতন কাঠামো সহজতর করার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিন্যাস এভাবে প্রণয়ন করা— শিক্ষানবিশ অফিসার, অফিসার, সিনিয়র অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও;
৩. সাধারণভাবে সব ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া;
৪. সব ব্যাংককে একই ধরনের পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী অন্তত প্রতি তিন বছরে পদোন্নতি কর্যকর করা;
৫. অধিক সন্তোষজনক কর্মফলের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি দুই বছর পর পর অ্যাকসেলারেটেড (accelerated) পদোন্নতি বিবেচনা করা; এবং
৬. প্রত্যেক ব্যাংকের বাৎসরিক মুনাফার ভিত্তিতে ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়া।
সারাবাংলা/টিআর
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন