Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বান্ধবী’র বাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার: হত্যা মামলা করবে পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:০৬

ঢাকা: রাজধানীর ভাটারা নতুনবাজার এলাকায় ‘বান্ধবী’র বাসা থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল আলম সেজানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে মেনে নিতে নারাজ তার পরিবার। সেজানের বাবা বলছেন, তার ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। সে কারণে এ ঘটনায় তারা হত্যা মামলা দায়ের করবেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে সেজানের বাবা সাইফুল আলম ফকির এ কথা বলেন। এদিন দুপুরে ঢামেক মর্গে সেজানের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে, মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ভাটারার ওই বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন- রাজধানীর ভাটারায় যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু

মঙ্গলবার সেজানের ‘বান্ধবী’ মৌ ইসলাম মিম ও তার মা নুর নাহার জানান, সেজানের সঙ্গে তার পরিবারের সম্পর্ক রয়েছে। সেজান যখন তাদের বাসায় যান, তখন তার মা বাসায় ছিলেন না। সেজান তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মৌ অন্য একটি ঘরে ছিলেন। মৌয়ের মা বাসায় ফিরলে সেজানকে ফ্যানের হুকের সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে ঝুলে থাকতে দেখেন। সেজান কোনো কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান তারা।

মৌ ও তার মায়ের এমন বক্তব্য মেনে নিতে পারছেন না সেজানের বাবা সাইফুল আলম ফকির। বুধবার বিকেলে তিনি বলেন, সেজান কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে। একটি হত্যা মামলা দায়ের করব।

সাইফুল আলম জানান, সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে সেজান তার ছোট ভাই সিহাবকে নিয়ে বাণিজ্যমেলায় গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মেলা থেকে ফেরেন। ছোট ভাইকে বাসায় পাঠিয়ে দিলেও সেজান বাসায় ফেরেননি। পরে তারা মঙ্গলবার জানতে পারেন, সেজানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে সন্তানকে মৃত দেখতে পান বলে জানান তিনি।

পরিবার জানিয়েছে, সেজানের মরদেহ কালাচাঁদপুরের বাসায় নিয়ে জানাজা পড়ানো হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাবে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে।

সেজানের মৃত্যুরহস্য নিয়ে জানতে চাইলে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তবে আরও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে, বুধবার দুপুরে ঢামেক মর্গে সেজানের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা করেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। এরপর স্বজনদের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ।

ঢামেক মর্গ সূত্রে জানা গেছে, ময়নাতদন্তের সময় সেজানের মরদেহ থেকে ভিসেরাসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

সেজান ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সেজান ছিলেন দ্বিতীয়। পরিবারের সঙ্গে গুলশান কালাচাঁদপুরে থাকতেন।

জানা যায়, সেজান ও মৌ ইসলাম মিম বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। সেই সুবাদেই তাদের ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মৌয়ের বাসাতেও যাতায়াত ছিল সেজানের। মঙ্গলবার বিকেলে ফোন করেই সেজান চলে যান মৌয়ের বাসায়।

মৌয়ের মা নুর নাহার বলেন, সেজান আমাদের বাসায় মাঝে মাঝে আসত। কেন সে আমাদের বাসায় এসে এই কাজ করল, কিছুতেই বুঝতে পারছি না।

সারাবংলা/এসএসআর/টিআর

‘বান্ধবী’র বাসায় মরদেহ টপ নিউজ নাজমুল আলম সেজান মরদেহ উদ্ধার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর