Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিলখানা হত্যা: খালাস পাওয়াদের জামিন চায় পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:০৪

ঢাকা: পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে (বর্তমান বিজিবি) বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ও সল্পমেয়াদী সাজা ভোগ শেষ হওয়া বিডিআর সদস্যদের জামিন দিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে তাদের পরিবার।

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা জজ কোর্ট ভবনে অবস্থিত কোর্ট রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায়।

এদিন হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য সুবেদার মো. আব্দুর রশিদের ছেলে মো. সাকিব আহমেদ বিডিআর সদস্যদের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০০৯ সালে ২৪ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের হয়। মামলাগুলো যথাক্রমে- (ক) বিডিআর আইনে বিভাগীয় মামলা (খ) হত্যা মামলা (গ) বিস্ফোরক মামলা। বিভাগীয় মামলা শেষ হয় ২০১১ সালের মধ্যে। এরপর হত্যা মামলাটি ৬৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে মাত্র ২ বছর ১১ মাসের মধ্যে সকল আইনি কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় প্রদান করেন। ওই মামলা উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি হয় ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর। যা বর্তমানে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে বিচারাধীন।

সাকিব আহমেদ জানান, অথচ একই সাথে হত্যা ও বিস্ফোরক দুটি মামলা গেজেট হওয়ার পরও বিস্ফোরক মামলাটি কোনো এক অদৃশ্য কারণে আলাদা করা হয়। যা এখন নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। বিস্ফোরক মামলাটি প্রাথমিক অবস্থায় মাত্র ২০১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমাসে দুই দিন ধার্য থাকলেও নামমাত্র এক ঘণ্টা কোর্ট চলে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার প্রায় ১৩ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু অদ্যাবদি বিচার কার্য শেষ হচ্ছে না বা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অথচ বিচারিক আদালত থেকে হত্যা মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পাওয়া ২৭৮ জন এবং স্বল্প মেয়াদী সাজাভোগ শেষে খালাস পাওয়া ১৯০ জনসহ সর্বমোট ৪৬৮ জন বিডিআর সদস্য মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। কিন্তু বিস্ফোরক মামলার কারণে তারা মুক্তি পাচ্ছেন না। এমনকি মামলাও নিষ্পত্তি করা হচ্ছে না এবং জামিনও দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরা অসহায় পরিবারগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

বিজ্ঞাপন

সাকিব বলেন, ‘একজন বন্দির সব আইনি সুযোগ-সুবিধাসহ ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু আমরা সেগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৩ বছরেও আমাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আবার জামিন নামঞ্জুরের সার্টিফাইড কপিও সরবরাহ করা হচ্ছে না। যার কারণে উচ্চ আদালতেও জামিন আবেদন করা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘একেক জন ভিকটিম পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। অথচ একটি ঘটনায় সেই ব্যক্তিরা কারাগারে অবরুদ্ধ হওয়ার কারণে পরিবারগুলো করুণ অসহায় অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচ্চ আদালত কর্তৃক ২০১৭ সালে হত্যা মামলায় আপিল নিষ্পত্তি বা রায় হয়। কিন্তু চার বছরের বেশি সময় পার হলেও অদ্যাবদি রায়ের কোনো কাগজ কারাগারে পৌঁছায়নি। বর্তমানে অন্তরীণ বিডিআরদের অনেকে বয়সের কারণে চলাচলে অক্ষম হয়ে নিদারুণ কষ্টে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ করছে। ইতোমধ্যে নানা রোগে শোকে কারাগারে ৪২ জন্য মৃত্যুবরণ করেছে। যাদের মধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জন রয়েছেন।

তাই বিস্ফোরক আইনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি বা জামিন প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

খালাসপ্রাপ্তদের জামিন বিডিআর বিদ্রোহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর