Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ম্যাক্সন ভারতে গ্রেফতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. নুরনবী ম্যাক্সন ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বায়োজিদ বোস্তামি ও পাঁচলাইশ থানায় ১৩টি মামলা আছে। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নগর পুলিশ অবগত হয়েছে।

গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগণার বারানগর থানার ডানলপ এলাকা থেকে দেশটির সিআইডি তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে ওইদিনই স্থানীয় বারানগর থানায় বিদেশি নাগরিকত্ব আইনে মামলা দায়ের হয়।

গ্রেফতার মো. নুরনবী ম্যাক্সন (৪০) চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার জাহানপুর এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে।

ভারতে গ্রেফতারের পর চট্টগ্রাম নগর পুলিশ তথ্য পেয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ওমান বিমানবন্দর থেকে ভারতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বারানগর থানা এলাকায় অবস্থান করছিল। উত্তর চব্বিশপরগণার ডানলপের নর্দার্ণ পার্ক এলাকায় ‘তমাল চৌধুরী’ নামে বসবাস করছিল সিএমপির মোস্ট ওয়ান্টেড এই সন্ত্রাসী।

ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে, খুন-চাঁদাবাজির অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানায় ১১টি ও পাঁচলাইশ থানায় ২টি মামলা আছে। এর মধ্যে সাতটি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে।

জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভারতে ম্যাক্সনকে গ্রেফতারের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখায় চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রামের একসময়ের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের সহযোগী হিসেবে ম্যাক্সন এবং আরেক সন্ত্রাসী মো. সরওয়ার ছিল নগরীর মূর্তিমান আতঙ্ক। ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ আটজনকে খুনের ঘটনায় দায়ের আলোচিত এইট মার্ডার মামলার আসামি ছিল সাজ্জাদ। ২০০১ সালের ৩ অক্টোবর গ্রেফতার হওয়া সাজ্জাদ বিএনপি সরকারের আমলে কারামুক্ত হয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যায়।

তখন সাজ্জাদের অস্ত্রভাণ্ডারসহ অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নেয় সরওয়ার ও ম্যাক্সন। ২০১১ সালে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ দু’টি একে ৪৭ রাইফেলসহ সরওয়ার এবং ম্যাক্সনকে গ্রেফতার করে। ২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাতারে চলে যায় সরওয়ার ও ম্যাক্সন।

২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কাতার থেকে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সরওয়ার। পরে তাকে বায়োজিদ বোস্তামি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছিল। সরওয়ারের দেওয়া তথ্যে পুলিশ নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার খোন্দকারাবাদ কালু মুন্সি পাড়ায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মজুদ রাখা একটি আমেরিকায় তৈরি একে-২২ রাইফেল ও ৩০ রাউণ্ড গুলি এবং ২টি এলজি ও ৪ রাউণ্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছিল।

সরওয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় পুলিশ জানিয়েছিল, কাতারে পালিয়ে যাবার পর সরওয়ার, ম্যাক্সন এবং একরাম নামে এক যুবলীগ ক্যাডারসহ তিনজন একসঙ্গে ছিল। পরে ম্যাক্সনের সঙ্গে সরওয়ারের সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০২০ সালে কাতারে একটি মারামারির ঘটনায় সরওয়ার গ্রেফতার হয়। একমাস কারাবাসের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কারাগারে থাকার সময় সরওয়ার জানতে পারে, ম্যাক্সন ও একরাম কাতার ছেড়ে গেছে।

২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর সরওয়ার-ম্যাক্সন ও একরামের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবলীগের কর্মী নামধারী পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। তখন পুলিশ জানতে পেরেছিল, মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে অবস্থান করা দুই দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সরওয়ার ও ম্যাক্সন এবং যুবলীগ ক্যাডার একরামের মধ্যে ঐক্য হয়। তাদের নামে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি, আকবর শাহ, অক্সিজেন, মুরাদপুরসহ আশপাশের এলাকায় চলছিল চাঁদাবাজি। গ্রেফতার পাঁচজন সরওয়ার, ম্যাক্সন ও একরামের নামে চাঁদা নিয়ে ভাগ পাঠায় কাতারে।

দুই বছর আগে গ্রেফতার সরওয়ার বর্তমানে কুমিল্লা কারাগারে অন্তরীণ আছেন বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি কামরুজ্জামান।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

টপ নিউজ মো. নুরনবী ম্যাক্সন সন্ত্রাসী ম্যাক্সন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর