চিড়িয়াখানায় অনিয়ম-দুর্নীতি বরদাশত নয়: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:৫৭
ঢাকা : জাতীয় প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানায় কোনরকম অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় আকস্মিক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী এ কথা জানান। এদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড় এগারোটা পর্যন্ত মন্ত্রী চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রাণীর খাঁচা, প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র, ঔষধ সংরক্ষণ স্থান পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন প্রাণীদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের খাবার ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অবহিত হন।
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতিফ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার আধুনিকায়ন করে সিঙ্গাপুর, দুবাই এর মানে উন্নীত করার জন্য আমরা মাস্টারপ্ল্যান করছি। এরইমধ্যে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যাদের প্ল্যান আগামী মার্চ মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে। এ প্ল্যানের মাধ্যমে অত্যাধুনিক চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অবন্তিকা ও দুর্জয় নামে দুটি বাঘ শাবক, জেব্রা, জিরাফ শাবক, আফ্রিকান সিংহ, ইম্পালা, ওয়াইল্ড বিস্ট জাতীয় চিড়িয়াখানায় এবং রংপুর চিড়িয়াখানায় আরো একটি প্রাণী মারা গেছে। এসব প্রাণী কারও কর্তব্যে অবহেলা নাকি রোগ সংক্রমণে মারা গেছে, এ বিষয়গুলো দেখা ও বোঝার জন্য তাদের পোস্ট মর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে, দুই দফা তদন্ত করা হয়েছে। আরও কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তদন্তের জন্য পুনরায় আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
চিড়িয়াখানার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত অথবা যারা খাবার সরবরাহ করে বা এর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের দায়িত্বে গাফিলতি, অসহযোগিতা, অযোগ্যতা আছে কিনা, পশু চিকিৎসায় ভেটেরিনারি ডাক্তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে কিনা, অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসা যথাসময়ে হয়েছে কিনা, অসুস্থতার ক্ষেত্রে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো ঘাটতি আছে কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য আমরা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেছি।
মন্ত্রী বলেন, ‘চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহিত না করে বাস্তবে কি অবস্থা আছে,স্বাভাবিকভাবে প্রাণীরা কী অবস্থায় থাকে তা দেখার জন্য আকস্মিক পরিদর্শনে এসেছি। খাবার সরবরাহকারী সময়মতো খাবার সরবরাহ করছে কিনা, সরবরাহকৃত খাবার সঠিক পরিমাণে দেওয়া হচ্ছে কিনা, খাবারের মান কেমন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে যথাসময়ে প্রবেশ করছে কিনা, বিভিন্ন খাঁচায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী, ডাক্তার ও সুপারভাইজার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা এ বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার পর কারো গাফিলতি, দায়িত্বহীনতা বা অযোগ্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘চিড়িয়াখানার সব বিষয় আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছি। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে সেগুলো উঠে আসবে। প্রাণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত না হয়ে থাকলে কেন এটা হয়নি তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের বহন করতে হবে। যে সব প্রাণীর খাঁচার পরিবেশ আরও উন্নয়ন করা প্রয়োজন সেগুলো কেন করা হয়নি সে বিষয়গুলোও আমরা দেখছি। এখানে একটি প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মারা গেছে। তারপরও তার পোস্টমর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট দেশের দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা এনেছি। রিপোর্টে সংক্রমণের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তৃতীয় রিপোর্ট আনা হবে এবং তাতেও আমরা সন্তুষ্ট না হলে প্রয়োজনে দেশের বাইরে রিপোর্টের জন্য পাঠানো হবে।’
সারাবাংলা/জিএস/একে