Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নীপাকে মুসলিম রীতিতে দাফনের নির্দেশ


১২ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:১৭

।।  স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা : দীর্ঘ ৪ বছর ধরে মর্গে থাকা নীলফামারীর হোসনেয়ারা বেগমের (ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে নীপা রানী) মরদেহ মুসলিম রীতিতে দাফনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ের কপি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে মরদেহ দাফন করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বিচারপতি মিফতা উদ্দিন চৌধুরীর একক বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে মামলার বাদী জহুরুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ কে এম বদরুদ্দোজা এবং বিবাদী অক্ষয় কুমারের পক্ষে ছিলেন সমীর মজুমদার।

রায়ের পর আইনজীবী সমীর মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ চার বছর ধরে মর্গে থাকা হোসেনেয়ারা বেগম লাইজুর লাশ মুসলিম রীতিতে দাফনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল নীপা রানী। একটি লাশ দীর্ঘ চার বছর ধরে মর্গে পড়ে আছে, দাফন হচ্ছে না। এটি একটি অমানবিক বিষয়। লাশটির দাফন হওয়া উচিত।

তিনি আরও জানান, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় লাশ দাফনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মরদেহ দেখতে নিহতের বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজনেরা অনুরোধ করলে সে সুযোগ দেওয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, পারিবারিক জটিলতায় গত চার বছরের বেশি সময় হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল নীপা রানীর মরদেহ। এত দিনেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০১৪ সালের ১০ মার্চ থেকে নীপার মরদেহটি হাসপাতালের মর্গেই পড়ে আছে। ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার কারণে মরদেহ নিয়ে এমন আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবার। মামলাটি বিচারিক আদালত ঘুরে হাইকোর্টে আসে। রংপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে মরদেহ হস্তান্তর করতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেছিলেন নীপা-লাইজু। এভাবেই দিন কাটছিল তাদের। কিন্তু বাদ সাধে নীপার পরিবার। নীপা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার পরিবার লাইজুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করে। এই মামলায় লাইজুকে নেওয়া হয় কারাগারে। নীপাকে রাখা হয় নিরাপত্তা হেফাজতে। পরে নীপাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয় তার পরিবার। লাইজুও জেল খেটে বের হন। কিছুদিন পর লাইজু বিষ পানে আত্মহত্যা করেন। নীপাও শোকে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন।

এরপর নীপার মরদেহ দাবি করে আদালতে মামলা করে দুই পক্ষই। এ মামলাটি নিম্ন আদালত ঘুরে উচ্চ আদালতে আসে। অবশেষে বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে সিদ্ধান্ত আসে হোসনে আরার (নীপা রানী) মরদেহ ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফন করতে হবে।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমআইএস

আদালত নীপা রানী নীলফামারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর