উত্তেজনার মধ্যে ইউক্রেন ও রাশিয়া যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:৩৬
রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান সংকটের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ দেশ দু’টিতে সফরে যাচ্ছেন। ইউক্রেনে রাশিয়া যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের লাগাতার সতর্কবার্তার মধ্যেই কিয়েভ ও মস্কো যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর।
ওলাফ শোলৎজ সোমবার ইউক্রেনে পৌঁছাবেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেন্সকির সঙ্গে বৈঠক করবেন। একদিন পর মঙ্গলবার তিনি রাশিয়ায় যাবেন। মস্কোতে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
শুক্রবার জার্মান পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তার আসন্ন সফর নিয়ে শোলৎজ বলেন, ইউরোপে যুদ্ধ প্রতিরোধ করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা রাশিয়াকে বার্তা দিতে চাই যে, যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের ক্ষয়ক্ষতি হবে অনেক বেশি। আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে ঐক্যবধ্য।
আরও পড়ুন- বাইডেন-পুতিন ফোনালাপ: হামলা হলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাবে পশ্চিম
এর আগে গত সপ্তাহে ইউক্রেন হামলা থেকে পুতিনকে নিবৃত্ত করতে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা নিয়ে গত সপ্তাহে রাশিয়া উড়ে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তবে ওই বৈঠকেও উল্লেখযোগ্য কোনো ফল আসেনি। তারও আগে, ইউক্রেন ইস্যুতে তিনবার পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ম্যাখোঁ। মস্কো সফরের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও ৪০ মিনিট টেলিফোনে কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
পরে শনিবার বাইডেন-পুতিনও ফোনে এক ঘণ্টা কথা বলেন। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক ঘণ্টার ওই ফোনালাপে জো বাইডেন ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে পশ্চিমা শক্তি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাবে। একইসঙ্গে, যুদ্ধ হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে রাশিয়ার মর্যাদা হ্রাস পাবে বলেও পুতিনকে সতর্ক করেছেন বাইডেন। এ ফোনালাপের ব্যাপারে ক্রেমলিনের তরফ থেকে এখনও কোনো বিবৃতি আসেনি।
এরই মধ্যে জানা গেছে, রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেন্সকি। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সের্গেই নিকিফরভ সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ঘি ঢেলেছে রাশিয়ার সর্বশেষ উদ্যোগ। শনিবার ক্রেমলিন ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রক্ষার জন্য কৃষ্ণ সাগরে নৌবাহিনীর শক্তি বাড়িয়েছে।
এদিকে, শনিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের রুশ জলসীমায় প্রবেশ করেছিল পারমাণবিক অস্ত্রবাহী একটি মার্কিন সাবমেরিন। ওই সাবমেরিনটিকে তাড়িয়ে দিয়েছে রুশ নৌবাহিনী। তবে রাশিয়ার এ দাবি সত্য নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এমন নিশ্চয়তা দাবি করে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে মস্কো। ইউক্রেনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, রাশিয়া যে কোনো সময় সামরিক হামলা চালাতে পারে।
তবে রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে, সামরিক হামলা চালানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। যদিও ইউক্রেন সীমান্তে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে অবস্থান করছে রুশ সামরিক বাহিনী। এছাড়া চলতি সপ্তাহে ভূমধ্যসাগর ও প্রতিবেশী বেলারুশে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে মস্কো—যা ইউক্রেনে হামলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি বলে মনে করছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
আরও পড়ুন-
- ন্যাটো কী এবং কখন কাজ করে
- ইউক্রেনকে কি এবার বাঁচিয়ে দেবে রাসপুতিৎসা?
- ইউক্রেন থেকে কূটনীতিক প্রত্যাহার করল রাশিয়া
- আমেরিকার অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিন্দা করলেন শি-পুতিন
- চীন-তাইওয়ান, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত— ২ ফ্রন্টে যুদ্ধ করবে আমেরিকা?
সারাবাংলা/আইই