Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাতাসে বসন্ত, বাগানে টকটকে লাল শিমুল

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:০৭

সুনামগঞ্জ: হালকা ঠাণ্ডার অনুভূতি, স্নিগ্ধ বাতাস, একদিকে পাহাড়, মাঝখানে জাদুকাটা নদীর ঢেউ। অন্যদিকে নতুন গজানো সবুজ পাতায় বসন্তের আবাহনে যেন ফাগুনের আগুন লেগেছে সুনামগঞ্জের শিমুল বাগানে। প্রতিবছরের মতো এবারও টকটকে লাল শিমুল ফুটেছে পুরো বাগানে। রক্তিম রঙে এখানে বসন্তে গাছে গাছে ফুটেছে হাজার হাজার শিমুল ফুল।

প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখের তৃষ্ণা মেটাতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাংগুয়ার হাওরের সুবিশাল স্বচ্ছ জলরাশি, ফাঁকে ফাঁকে ছোট ছোট লেক, মেঘলয় পাহাড়ের পাদদেশে বয়ে চলা স্বচ্ছ নীল জলের লেক, জাদুকাটা নদী আর মেঘালয়ের ঠিক মধ্যখানে বারাম নদীর তীরে ধু ধু বালুচরে একজন প্রকৃতিপ্রেমী জয়নাল আবেদীন রেখে গেছেন তার অনন্য কীর্তি দেশের সর্ববৃহৎ শিমুল বাগান। ফাগুনের অরুণ আলোয় এই টুকটুকে লাল ফুলগুলো দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন শতশত পর্যটক।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়ভাবে বাগানটির নাম ‘শিমুলবাগ’। বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদীন গড়ে তুলেছিলেন এই বাগান। গাছ লাগানো ও পরিচর্যার পুরানো নেশাই তাকে বাগান রচনায় প্রভাবিত করে। দেশে বিস্তীর্ণ পরিসরে এত বড় শিমুল বাগান আর কোথায় নেই।

উত্তর বড়বদল ইউনিয়নের সুদৃশ্য বারাম নদীর তীর ঘেঁষেই মানিগাঁও গ্রাম। এ গ্রামেই জয়নাল আবেদীনের নিজস্ব আড়াই হাজার শতক জায়গা একেবারেই অনাবাদি ছিল। ১৯৯৮ সালে এই জায়গার পাশে দুটো পরিণত শিমুল গাছ দেখে তিনি এখানে শিমুল বাগান করার পরিকল্পনা হাতে নেন! শেষমেষ ২০০২ সালের দিকে শিমুল বাগান গড়ে তুলেন।

২৪০০ শতক জায়গায় তিনি লাগিয়ে দিলেন ৩ হাজার শিমুলের চারা। সমান ১৪ ফুট দূরত্ব রেখে। ১৬ বছরে গাছগুলো বড় হয়ে যেন যৌবনে পা রেখেছে। ফাগুনের অরুণ আলোয় ফোটে বাগানের শিমুল ফুলগুলো। লাল শিমুল ফুলগুলো দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে শতশত পর্যটক।

বিজ্ঞাপন

সিলেট থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক রুপা তালুকদার বলেন, ‘এত সুন্দর একটা জায়গায় এই প্রথম আমি এলাম। এখানে এসে যা দেখলাম, তাতে আমি প্রকৃতির প্রেমে পড়ে গেছি। মন চাইছে একবারে থেকে যাই এখানে।’

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক বিজয় মিয়া বলেন, ‘ফাগুনের আগুন লেগেছে এই শিমুল বাগানে, যা নেভানোর সাধ্য কারও নেই। এত সুন্দর বিশাল এই শিমুল বাগানে এসে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।’

যশোর থেকে আসা পর্যটক নাহিদা গনি বলেন, ‘খুব ইচ্ছে ছিল শিমুল ফুল দিয়ে মাথার চুল বাঁধব। আজ এখানে এসে সেই আশা পূরণ করলাম। সত্যি এত সুন্দর জায়গা এই প্রথম আমি দেখেছি। এই শিমুল বাগান এতটা সুন্দর যে শুধু চেয়ে থাকার ইচ্ছে হয়।’

শিমুল বাগানের বর্তমান মালিক মো. রাকাব উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাবার নিজের হাতে তৈরি করা এই বাগান এখন দেশের জনপ্রিয় শিমুল বাগান হিসেবে পরিচিত। এখানে দেশের দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। পর্যটকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা এখানে খাবারের ব্যবস্থা করেছি। ভালো পানিরও সুব্যবস্থা করেছি।’

সারাবাংলা/এমও

ফাগুন বসন্ত শিমুল শিমুল বাগান

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর