কোস্ট গার্ড অধিক সক্ষমতা অর্জন করবে, আশা প্রধানমন্ত্রীর
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৫৯
ঢাকা: আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জাহাজের সংযোজন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমেই একবিংশ শতাবদ্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আরও বেশি সক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সদর দফতর আগারগাঁও প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
নিজস্ব শিপ ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে আরও সৃদৃঢ় করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুলনা শিপইয়ার্ড একসময় বিএনপি সরকারের আমলে এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সেটা বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে। যেহেতু এটা লাভজনক না তাই এটা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমি সরকারে আসার পর এই শিপইয়ার্ড নৌবাহিনীর হাতে অর্পণ করি।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশ, বিশাল সমুদ্রসীমা। আমরা শুধু শুধু কেন পরের মুখ চেয়ে থাকব? ঐতিহাসিক যুগ থেকেই বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ এবং সেটা রফতানি করার একটা বাণিজ্য আমাদের ছিল। কাজেই সেটা আবার কার্যকর করি। যার ফলে আজ শুধু বিদেশ থেকে কিনে আনছি না, আমরা নিজেরাও জাহাজ তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং ভবিষ্যতে আরও করব। ভবিষ্যতে আরও একটা শিপইয়ার্ড করতে পারব দক্ষিণাঞ্চলে।’ জায়গা দেখে রেখেছি বলেও অবহিত করেন সরকারপ্রধান।
গত বছর কোস্ট গার্ডে নয়টি জাহাজ এবং একটি ঘাঁটি কমিশনিং করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নৌযানগুলো যুক্ত হওয়ায় সংস্থাটির জন্য একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছে। এছাড়া কোস্টগার্ডের গভীর সমুদ্রে টহল উপযোগী আরও চারটি ওপিভি এবং নয়টি প্রতিস্থাপক জাহাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডেকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এই বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রজাতির জাহাজ, হোবার ক্রাফট ও দ্রুত গতিসম্পন্ন বোর্ড।’ হোবার ক্রাফট এলে খুব দ্রুত যেকোনো অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগের উদ্যোগও স্থাপন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন জাহাজের সংযোজন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমেই একবিংশ শতাবদ্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড অধিকতর সক্ষমতা অর্জন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় জলসীমায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, মৎস্য সম্পদ রক্ষা করা, দেশের সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা বিধান, চোরাচালান, মাদকবিরোধী অভিযান, ডাকাত দমন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলে জানমাল রক্ষায় কোস্টগার্ডের ভূমিকা উত্তরোত্তর বাড়ছে।’ এসময় জাটকা নিধন রোধ ও মা ইলিশ রক্ষায় কোস্টগার্ডের ভূমিকার প্রশংশা করেন তিনি।
ভবিষ্যতে আরও নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করতে কোস্ট গার্ডকে আধুনিক যুগোপযোগী বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি বলে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবসময় দেশপ্রেম, সততা, ঈমানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে কোস্টগার্ডের সুনাম ও মর্যদা সমুন্নত রাখবেন। দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। এই বাহিনীর ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা রাখতে এবং আপনাদের সার্বিক কল্যাণে প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার অবশ্যই আমাদের সরকার তা করে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহ যাদের সার্বিক সহযোগিতায় কোস্ট গার্ডের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন সম্ভব হয়েছে তাদেরও বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
সারাবাংলা/এনআর/এমও