দুর্নীতির মামলায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের কারাদণ্ড
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:২৫
নড়াইল: হাট ইজারা থেকে পাওয়া অর্থ আত্মসাতের মামলায় নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌরমেয়র অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ ১১ জনকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন যশোর বিশেষ জজ আদালত। তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
নড়াইলের রূপগঞ্জ হাট ইজারা দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দণ্ড ও জরিমানা ছাড়াও আসামিদের আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে হবে।
নড়াইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত বাকি আসামিরা হলেন— তৎকালীন কাউন্সিলর খন্দকার আল মনসুর বিল্লাহ, কাউন্সিলর আহম্মদ আলী খান, কাউন্সিলর তেলায়েত হোসেন বাবু, ইজারাদার রফিকুল ইসলাম, ইজারাদার রাধে কুন্ডু, ইজাজুল হাসান বাবু, ইজারাদার জিল্লুর রহমান, হাট ইজারাদার এইচ এম সোহেল রানা, তৎকালীন পৌর সচিব শফিকুল আলম ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে আসামিরা ১৪১২ বঙ্গাব্দে নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ সাধারণ হাট ও নড়াইল বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে ৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা ও ১৪১১ বঙ্গাব্দে একই হাট থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা আদায় করে। দুই বছর হাটের ইজারা থেকে পাওয়া এই ১২ লাখ ২ হাজার ২৮০ টাকা তারা পৌরসভায় জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, ইঞ্জিনিয়ার সচিবসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জজ আদালতে পাঠানো হয়।
দুদক পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, আসামিদের আত্মসাৎ করা ১২ লাখ ২ হাজার ২৮০ টাকার মধ্যে জিল্লুর রহমান ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬০ টাকা, সোহেল রানা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১২০ টাকা, রাধেকুন্ডু ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রকিবুল ইসলাম ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ইজাজুল হাসান ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা পরিশোধ করবেন। সাজাপ্রাপ্ত এজাজুল হাসান, জিল্লুর রহমান ও রকিবুল হাসান বাদে বাকি সবাই কারাগারে আটক আছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ আট জনকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দুদকের মামলায় রাঘ ঘোষণার কয়েকিদন পর ওই বছরের ২ অক্টোবর যশোর স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরে ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান এবং স্বপদে বহাল হন।
সারাবাংলা/টিআর