Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: জড়িত ৬ জনই গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:১০

ঢাকা: গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৬ জনকেই গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

গ্রেফতাররা হলেন, রাকিব মিয়া ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), মো. নাহিদ রায়হান (২৪) মো. হেলাল (২৪) এবং তূর্য মোহন্ত (২৬)।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ন্যাক্কারজনকভাবে গণধর্ষণের শিকার হন। ওইদিন ভুক্তভোগীসহ দুই শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদরের নবীনবাগ হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে মেসে যাওয়ার সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে ভিকটিমকে জোরপূর্বক স্থানীয় একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। সারাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে ওই পৈশাচিক ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানায়।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর অভিযানে ২৫ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা গণধর্ষণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাবের পরিচালক বলেন, গ্রেফতাররা মূলত রাকিবের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি অপরাধ চক্রের সদস্য। তারা সকলেই গোপালগঞ্জ ও তার আশপাশের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। গ্রেফতার তূর্য মোহন্ত ব্যতীত তারা প্রায় ৮/১০ বছর যাবত নবীনবাগ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন, আড্ডা, জুয়াসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মে লিপ্ত ছিল। এছাড়াও তারা চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়িত ছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাটে স্কুল/কলেজের ছাত্রীদের উত্যক্ত করত বলে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেফতাররা ইজিবাইক দিয়ে নবীনবাগ হেলিপ্যাড সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার পথে ভুক্তভোগীকে তার বন্ধুসহ দেখে ইজিবাইক থামিয়ে তাদের নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করে এবং বিভিন্ন ধরনের অশালীন মন্তব্য করতে থাকে। তাদের সঙ্গে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে তাদের জোরপূর্বক ঘটনাস্থলের পাশে ঢালু জায়গায় নিয়ে যেতে চাইলে ভুক্তভোগীর বন্ধু বাধা দেওয়ায় গ্রেফতাররা তাকে মারধর করে। গ্রেফতাররা ভিকটিমকে স্থানীয় একটি ভবনে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। মূলত পাশবিক প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই ওই ন্যাক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা স্বীকার করে।

গ্রেফতার রাকিব মিয়া ইমন স্থানীয় একটি মাদ্রাসা হতে দাখিল ও আলীম সম্পন্ন করে। সে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে রিসেপশনিস্ট হিসেবে চাকরি করত। এর আগে তার বিরুদ্ধে মাদক ও মারামারির মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

গ্রেফতার পিয়াস ফকির গোপালঞ্জের একটি পাওয়ার হাউজে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। গ্রেফতার প্রদীপ বিশ্বাস স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণি পর্যযন্ত পড়ে। সে গোপালগঞ্জে হোম সার্ভিসের মাধ্যমে এসি ও ফ্রিজ মেরামতের কাজ করত। গ্রেফতার নাহিদ রায়হান স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়ণরত। গ্রেফতার মো. হেলাল স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। সে একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার হিসেবে চাকরি করত।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার তূর্য মোহন্ত খুলনার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৮ সালে ডিপ্লোমা শেষ করে। পরবর্তীতে সে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য বিদেশ যায়। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শেষ বর্ষে থাকাকালীন কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দেশে আসে। সে গোপালগঞ্জে গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। তার বিরুদ্ধেও থানায় একটি মারামারির মামলা রয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এসএসএ

সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর