লাশঘরে মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, ‘পাহারাদার’ গ্রেফতার
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:১২ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২২ ০০:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে শিশু ও এক নারীর মরদেহে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ জানিয়েছেন।
গ্রেফতার মো. সেলিম (৪৮) কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার সাতেশ্বর গ্রামের মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চমেক হাসপাতালের লাশঘরে অস্থায়ী ভিত্তিতে সেলিম কাজ করতেন।
আরও পড়ুন- মর্গে শতাধিক মৃত নারীকে ধর্ষণ!
সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর চকবাজার থানা পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার আনুমানিক ৩২ বছর বয়সী এক নারীর লাশ উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একই বছরের ২৫ মে নগরীর চান্দগাঁও থানা পুলিশ ১২ বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। তার মৃত্যুও হয়েছিল অস্বাভাবিকভাবে। ময়নাতদন্তের সময় চমেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ওই নারী ও শিশু মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না, সেটা জানতে আলামত সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ল্যাবে পাঠান। ল্যাবে পরীক্ষায় দু’জনের ভ্যাজাইনাল টিস্যু থেকে একই ধরনের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া যায় এবং ডিএনএ পরীক্ষায়ও দেখা যায়, দু’জনকে ধর্ষণকারী একই ব্যক্তি।
সিআইডির পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে আমরা নেপথ্যের ঘটনা অনুসন্ধান শুরু করি। উভয়ের সুরতহাল প্রতিবেদনে দেখা যায়, মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণের কোনো আলামত, বলপ্রয়োগে আঘাতের কোনো চিহ্ন তাদের শরীরে ছিল না। সাধারণত ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আসার পর সেগুলো লাশঘরে কয়েক ঘণ্টা রেখে দেওয়া হয়। তখন লাশঘরে পাহারাদার ছাড়া তেমন কেউ থাকে না। আমরা অনুসন্ধানে নিশ্চিত হই, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের লাশঘরে লাশগুলো যখন ছিল, তখন সুযোগ বুঝে সেলিম মৃতদেহগুলোর সঙ্গে বিকৃত যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়।’
সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর সেলিমের বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৭৭/১০৯ ধারায় সিআইডির উপপরিদর্শক (এসআই) কৃঞ্চকমল ভৌমিক বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চমেক হাসপাতাল থেকে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়।
শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম দুই মৃতদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকার করেছেন। ২০১৭ সালেও তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছিল।
২০২০ সালে রাজধানীর শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একই অপরাধে একজন ডোম সহকারীকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর