রাজধানীতে পুলিশের হাত-পা বেঁধে ডাকাতি
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২৩:৩৮
ঢাকা: রাজধানীর ডেমরা এলাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা পুলিশ কর্মকর্তাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাত ও পা বেঁধে ডাকাতি সম্পন্ন করে।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে বালুরমাঠের ছোট পাইটি এলাকায় যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক সুমনের একতলা বাড়িতে মুখোশ পরিহিত ডাকাত দল সশস্ত্র হামলা চালায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথমে ডাকাত দল বাড়ির কেচি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর বাড়ির কাঠের দরজা শাবল দিয়ে আঘাত করে ভেঙে চুরমার করে। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী এবং তাদের আত্মীয় আরেকজন পুলিশ কনস্টেবল চিৎকার করলেও আশপাশের কোনো ব্যক্তি এগিয়ে আসেনি। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ডাকাত দল বাসার ভেতরে অবস্থান করে পরিবারের সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা প্রায় আট ভরি স্বর্ণালঙ্কার, একটি ঘড়ি এবং ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় এসআই আজিজুল হকের স্ত্রী ফারজানা আফরোজ বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেছেন।
ঘটনার পর ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে সারাবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় ডাকাতির ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আপাতত মনে হচ্ছে যে, এটি ডাকাতি। তবে এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা জড়িত আছে কি না-তা তদন্ত করছি।’
এসআই আজিজুল হক সুমন যাত্রাবাড়ী থানায় কর্মরত। স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে ওই বাড়িতে তার বসবাস। কয়েকদিন আগে তার বাসায় শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ে পুষ্পিতা ও তার স্বামী কনস্টেবল রাজু আহমেদ বেড়াতে আসেন। রাজু আহমেদ টুরিস্ট পুলিশে কর্মরত।
ডেমরা থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, রাত ৩টার দিকে এক দল ডাকাত বাসায় কেচি গেট ভেঙে ফেলে। তারা শাবল দিয়ে বাসার কাঠের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ডাকাতদের হাতে ছিল ছুরি, চাপাতি, লোহার রড ও শাবল। সবাই ছিল মুখোশ পরিহিত। তারা এসআই আজিজুলের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে তাকেসহ স্ত্রী, শাশুড়ি, ভাগ্নি, ভাগ্নির স্বামী এবং তাদের সন্তান শাহরিয়ার অর্নবের (১৫) হাত-পা বেঁধে ফেলে। এসময় কনস্টেবল রাজু আহম্মেদ চিৎকার করলে, ডাকাতরা তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করে।
ডাকাত দল ফারজানা আফরোজের গলার স্বর্ণের চেইন, হাতের আংটি, স্বর্ণের চুড়ি, কানের দুল টেনে ছিঁড়ে নেয়। পরে আফরোজার মায়ের শরীর থেকে স্বর্ণালঙ্কারগুলো একইভাবে ছিনিয়ে নেয়। সব মিলিয়ে তারা ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, একটি হাত ঘড়ি এবং ৫০ হাজার টাকা লুট করে। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তারা চিৎকার করলে, আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। এরপর স্থানীয়রা গিয়ে তাদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে উদ্ধার করে।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম