Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেতু পার হতে লাগে সাঁকো, ১৮ বছরেও কাটা হয়নি মাটি

বিজয় দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ মার্চ ২০২২ ০৮:৩৫

ছবি: সারাবাংলা

নেত্রকোনা: জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চাকুয়া বিল এলাকায় সেতুতে উঠতে হয় সাঁকো দিয়ে। সেতুটি নির্মাণ করা হয় প্রায় ৩০ বছর আগে। ২০০৪ সালের বন্যায় সেতুর দুই পাশের মাটি সরে যায়। তারপর ১৮ বছর হলেও দু’পাশে আর কেউ মাটি দেননি। ফলে ইউনিয়নটির ১০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে চরম ভোগান্তি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর সহায়তায় পার হতে হয় সেতুটি। এলাকাবাসী এর সমাধান চান। দ্রুতই এটির কাজ শুরু হবে জানিয়েছে উপজেলা এলজিইডি অফিস।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুর পূর্ব দিকে যাওয়াইল, শিমুলিয়া, নকদাপাড়া, চাকুয়া, হাপানিয়া, কৈলাটি এবং পশ্চিম দিকে ফকিরের বাজারসহ বেশ কিছু গ্রাম অবস্থিত। এসব গ্রামের লোকজনকে এই সেতুটি ব্যবহার করে জেলা সদরে যেতে হয়। সেতুটি বেহাল থাকায় লোকজনকে হাট বাজারে যেতে কষ্ট হয়। ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুর মাটি সরে যাওয়া দুই পাশেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এর ওপর দিয়ে লোকজন চলাচল করছে। ফকিরের বাজারের চল্লিশ কাহনিয়া হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমরা ছোটবেলা থেকে চাকুয়া বিলের এই সেতুতে বাঁশের সাঁকো দেখে আসছি। এটা আমাদের কাছে মনে হয় যেন সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো। এটাতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে অনেক সময়ই এই রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে পরার ঘটনা ঘটেছে।

কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি রায়পুর ইউনিয়নের ফকিরের বাজারে যাচ্ছি। কারণ এটি একটি বিখ্যাত বাজার। তাই সবাই এখানে বাজার করতে আসেন। বাজার-খরচ নিয়ে এমন সেতু দিয়ে পার হতে কষ্ট হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চাইলে সেতুর দুই পাশে মাটি দিতে পারতেন। কিন্তু তারা সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেতুটি ভাল না থাকায় কৃষিপণ্য নিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এতে ব্যয় যেমন বাড়ে, তেমননি ভোগান্তিও বাড়ে। আর শিক্ষার্থী, শিশু ও বয়স্কদের কথা না নাই বললাম।’

ফকিরের বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, ‘স্থানীয় গ্রামগুলোর মানুষ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত ও যানবাহনে পণ্য পরিবহন করত। সেতুটির মাটি সরে যাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরে ধান, চাল ও কৃষিপণ্য যানবাহনে পরিবহন করা যাচ্ছে না। ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অসুস্থ ব্যক্তি ও রোগীদের সাঁকো পার হয়ে হাসপাতালে যেতে কষ্ট হয়।

এ বিষয়ে রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু বলেন, ‘এটিতে আগে লিজের মাধ্যমে বাঁশের সাঁকো দেওয়া হত। এবার নির্বাচনের আগে আমি উন্মুক্ত করে দিয়েছি নিজের টাকায় সাঁকো করে।’

কেন মাটি কাটাননি এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ে কথা বলে আর জাতীয় পত্রিকায় লিখে কি হবে। এত বছর ধরে একটি সেতু পরে আছে সেটি কি এলজি ইডি দেখে না?’

বারহাট্টা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তেঘুরিয়া বাজার থেকে ফকিরের বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রাস্তাই কাঁচা। এক কিলোমিটার রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। আর বাকিটাও দ্রুত হবে। তবে এ সেতুর মাটি খননের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সারাবাংলা/এনএস

নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলা বাঁশের সাঁকো


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর