‘আমরা আনন্দিত, সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পেরেছি’
৯ মার্চ ২০২২ ১৬:৫৭
ঢাকা: ‘আমরা আনন্দিত, সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পেরেছি। আমরা দেখেছি, অনেক বড় বড় দেশের নাবিকরা সেখানে আটকা আছেন। কিন্তু তারা এখনো উদ্ধার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাদের কূটনীতিকরা অনেক পরিশ্রম আর চেষ্টা করে আমাদের উদ্ধার করে দেশে এনেছেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে ধন্যবাদ।’
বুধবার (৯ মার্চ) দুপুরে দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের মাস্টার জি এম নূরে আলম।
জি এম নূরে আলম বলেন, ‘আমরা আনন্দিত, সুস্থভাবে দেশে ফিরতে পেরেছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি আমাদের কলিগ ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মৃত্যুতে। তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তার মরদেহ হিমঘরে রেখে এসেছি। আশা করি, সরকার তার ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও দেখবে।’
হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তখন নিয়মিত ডিউটিতে ছিলাম। বিকেলে যখন আ্যটাক হয় তখন জাহাজের ব্রিজে আগুন লেগে গিয়েছিল। এরপর আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। সেই হামলায় হাদিসুরের মৃত্যু হয়।’
নূরে আলম বলেন, ‘এছাড়া আমরা দেখেছি, প্রায় ৬০ কিলোমিটার হেঁটে হেঁটে রিফিউজিরা সীমান্ত অতিক্রম করছে। যারা ইউক্রেনের নাগরিক। কিন্তু আমাদের এত পথ হেঁটে পার হতে হয়নি। আর যেদিন ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয় সেদিন থেকে আমরা আটকা পড়ে যাই। সেখান থেকে আমাদের চলে আসার কোনো পথ ছিল না।’
এদিকে, বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ডিজি-ইস্ট ইউরোপ) সিকদার বদিউজ্জামান বলেন, ‘থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ এখনও ইউক্রেনে রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা ইউক্রেন থেকে তার মরদহ উদ্ধার করতে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ নেব। দ্রুতই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে তার মরদেহ।’
কতদিনের মধ্যে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কত দিনের মধ্যে দেশে নিয়ে আসা সম্ভব- তা টাইমফ্রেমে বলা মুশকিল। কারণ সেখানে এখন যুদ্ধ চলছে। সেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারছে না। তবে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। চেষ্টা করছি।’
দেশে ফিরে আসা নাবিকদের এখন কী করা হবে? জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আটক থাকা নাবিকদের পোল্যান্ড, সোমালিয়া ও অস্ট্রিয়া বাংলাদেশের দূতাবাসসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ২৮ জন (ক্রু মেম্বার) নাবিককে উদ্ধার করে দেশে নিয়ে আসা হলো। এখন সবার শারীরিক পরীক্ষা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের পরিবারের কাছে যেতে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে বাংলাদেশি নাবিকরা সেখানে আটকা পড়েন। গত ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রাশিয়ার হামলার শিকার হয় জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। ওই হামলায় মারা যান থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর। কিন্তু ওই হামলায় বেঁচে যাওয়া জাহাজে থাকা ২৮ নাবিক বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দেশে আসেন।
সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম