গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সকলের সহযোগিতা চেয়েছি: সিইসি
১৩ মার্চ ২০২২ ২১:০৩
ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী দিনে যাতে আরও সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারি সেজন্য সংলাপে অংশ নেওয়া শিক্ষাবিদদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।
রোববার (১৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে শিক্ষাবিদেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় চার নির্বাচন কমিশনার, সচিব ও অতিরিক্ত সচিবসহ ইসি’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব, আমাদের সামর্থ বাড়াতে। আজকের সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শগুলো আমলে নিয়ে কীভাবে আগামী দিনে আরও সুন্দর, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে পারি সেজন্য সকলের সহযোগিতা চেয়েছি। তারাও বলেছেন যে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমঝোতা দরকার। সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা দরকার।’
কাজী হাবিবুর আউয়াল বলেন, ‘সংলাপে অংশগ্রহণকারী সকলের বক্তব্য আমরা মনযোগ দিয়ে শুনেছি এবং তাদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছি। এখানে আমাদের পক্ষ থেকে বেশি কিছু বলার নেই। উপস্থিত সবাই বেশ গুরুত্বসহকারে তাদের পরামর্শ ও বক্তব্য দিয়েছেন। আমরাও সেগুলো গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং সেগুলো লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। পরবর্তী সময়ে তাদের বক্তব্যগুলো আলোচনা-পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে করে আমাদের পক্ষ থেকে কী করণীয় রয়েছে সেগুলো নির্ধারণ করব। এবং যথাসময়ে তা গণমাধ্যমে অবহিত করব।’
সিইসি বলেন, ‘সব সাধ কখনো পূরণ হয় না, জিনিসটা আপেক্ষিক। আরও ভালো করা, আরও ভালো করা। কেউ কেউ দ্বিমত করতে পারেন। কেউ যদি বলেন এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে- সেটা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করব আমাদের সামর্থ বাড়াতে।’
৩০ জনকে দাওয়াত দিলেও উপস্থিত হয়েছেন ১৩ জন- এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য হোঁচট কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা কিন্তু নির্বাচন না। এটা ছিল সংলাপ। এখানে আমরা ৩০ জন শিক্ষাবিদদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে ১৫ জন এসেছেন। অনেকে ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেননি। মানুষের সুবিধা-অসুবিধা থাকতেই পারে। তবে সংলাপে আরও বেশি শিক্ষাবিদ উপস্থিত হলে আমরা খুশি হতাম। আগামীতে আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক সংলাপের জন্য বেশি মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’
আরও পড়ুন: ইসির প্রথম সংলাপ: আমন্ত্রিত ৩০ শিক্ষাবিদের মধ্যে উপস্থিত ১৩
সংলাপে বক্তব্য দিলেও তা কোনো কাজে আসে না- এমন অভিযোগ করে অনেক শিক্ষাবিদ আসেননি। সাংবাদিকদের এমন তথ্য সম্পর্কে সিইসি বলেন, ‘অনেক অতিথি অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। আজকেও দিয়েছেন। তবে তা আমলে নেওয়া না নেওয়ার বিষয়টি সময়ই বলে দেবে। আবার তাদের বক্তব্য নিয়ে কতটা ফলপ্রসূ হয়েছি তাও ভবিষ্যতই বলে দেবে।’
সংলাপে অংশ নিয়ে অনেকে বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে ইসি চাইলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা না কি অসম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সবাই এভাবে বলেননি। এটা ঠিক নয়। কেউ বলেছেন, আগে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছিল, এখন সাংবাধানিক সরকার রয়েছে, এর মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে। ফলে দলীয় ও নির্দলীয় সরকারের বিষয় নিয়ে উনারা বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা তা শুনেছি। তবে এভাবে বলেননি যে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সংলাপে অংশ নিয়ে অনেকে স্বীকার করেছেন যে, রাজনৈতিক সমঝোতা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি একটি সমঝোতা থাকে তাহলে সেটা হবে নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ বর্তমান ইসি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলে মনে করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
এর আগে, সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যেন অধিক অংশগ্রহণমূলক ও প্রকৃত অংশীদারিত্বমূলক হয়- সে লক্ষ্যে আজকের সংলাপ থেকে মতামত নিচ্ছে।’
সংলাপে ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও উপস্থিত হয়েছিলেন ১৩ জন। তারা হলেন— অধ্যাপক জাফর ইকবাল, ড. এম আনোয়ার হোসাইন, প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, প্রফেসর এম আবুল কাশেম মজুমদার, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমিন, প্রফেসর ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, ড. নিয়াজ আহম্মেদ খান ও ড. বোরহান উদ্দিন খান।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম