জেলা আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগ
১৩ মার্চ ২০২২ ২২:৫৩
নড়াইল: নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিধবা এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে বাড়ি দখল, জোরপূর্বক ওয়ারেশ সনদ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী জেসমিন নাহার এ ঘটনায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে অভিযোগ করেও বাড়ির দখল বুঝে পাননি।
এর প্রতিবাদে সদরের শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ বোর্ডের সামনে শাহাবাদ ইউনিয়ন নাগরি সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন এবং স্থানীয় গারোচোরা বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মৎস্যজীবী লীগ তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সভা করে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের মোজাহার হোসেন নড়াইল সদর হাসপাতালের পূর্ব পাশে ৮ শতাংশ জায়গার ওপর একটি পাকা ভবন নির্মাণ করে প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগমকে নিয়ে বসবাস করতেন। ২০০৭ সালে জেসমিন নাহার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রী নাসিমা কন্যা সুমিকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি রাঙ্গমাটি জেলায় স্থায়ীভাবে চলে যায়। দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিনের মৌসুফ আহম্মেদ (১২) নামে এক সন্তান রয়েছে। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর মোজাহারের মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিনই স্বামীর পাশে ছিলেন।
রোববার (১৩ মার্চ) সদরের আলোকদিয়া গ্রামে মোজাহারের স্বামীর ভিটায় জেসমিন নাহারের সাথে কথা হলে জানান, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা আলমের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন এসে আমাকে এসে মারধর করে আমার ও ছেলের বুকের ওপর অস্ত্র ঠেকিয়ে এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা, ২ ভরি স্বর্ণসহ ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর এ বছরের ১১ জানুয়ারি তারা পনরায় আমার বাড়িতে এসে বাড়ির বাকি সমস্ত মালামাল লুটপাট এবং জানালা দরজা ভেঙে ফেলে। পরে আমাকে মারধর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তিনি স্থানীয় এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ ঘটনার সঠিক বিচার এবং বাড়ি দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আমি শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে কাজ করার সময় সরদার আলমগীর হোসেন দলবল নিয়ে আমার অফিসে এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রথমে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর মৃত মোজাহের হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তান মৌসুফ আহম্মেদকে ওয়ারেশ থেকে নাম বাদ দিয়ে প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগম ও তার কন্যা আসমা সুলতানা সুমিকে ওয়ারেশ হিসেবে দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আমার সাথে যে আচরণ করা হয়েছে আমি এর উপযুক্ত শাস্তি ও বিচার দাবি করছি এবং জোরপূর্বক স্বাক্ষরকৃত ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্র উদ্বারের দাবি করছি। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।’
নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষ শাহাবাদ ইউনিয়নের মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে মোজাহারের প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগমের নামের ৩ শতাংশ জমি কিনেছি। আমি কাওকে মারধর করিনি। ওই তিন শতাংশ জায়গার মধ্যে বাড়ির অংশ পড়েছে।’ ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্রের জন্য তিনি শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদে যাননি বলেও জানান।
সারাবাংলা/এমও