তেল আমদানিতে কমছে ভ্যাট, উৎপাদন-ভোক্তা পর্যায়ে প্রত্যাহার
১৪ মার্চ ২০২২ ১৫:২৪
ঢাকা: রমজান মাস সামনে রেখে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি, উৎপাদন ও ভোক্তা— তিন পর্যায়েই ভ্যাট কমানো হচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, আমদানি পর্যায়ের ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এছাড়াও উৎপাদন পর্যায়ের ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ের ৫ শতাংশ ভ্যাট পুরোটাই প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় মন্ত্রী জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে শিগগিরই এ সংক্রান্ত এসআরও (স্ট্যাটিউটরি রেগুলেটরি অর্ডার, তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার নির্দেশনা দিয়ে জারি করা পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন) জারি হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজান উপলক্ষে আমরা কেউ যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য না কিনি। সবাই যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্যসামগ্রী কিনে মজুত করে, তাহলে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। যার পাঁচ লিটার তেল দরকার, সে ১০ লিটার কিনলে ঠেকাতে পারব না। রমজান উপলক্ষে সবাই কিনতে শুরু করলে তো বাজারে ঘাটতি দেখা দেবেই।
আরও পড়ুন- তেল-চিনিতে শুল্ক কমছে, এসআরও আসছে আজই
তিনি বলেন, সবার রান্নাঘরে আমরা ঢুকতে পারব না। তবে রমজান মাসের জন্য বেশি পণ্য না কেনার অনুরোধ করছি। যতটুকু কেনা দরকার, ততটুকুই কিনি।
দেশে ভোজ্যতেলের সংকট আছে কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ পণ্য মজুত রয়েছে। এই মজুত পণ্য দিয়ে রমজান মাস পার হয়ে যাবে। ফলে আশা করছি, এই সময়ে আগের দামেই পণ্য কেনা যাবে।
তেলে দামে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবের কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ১৩৫০ ডলারের তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ১৯০০ ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। দাম কমবে কি না, ব্রাজিল বলতে পারবে। কারণ ৯০ শতাংশ তেল আমরা সেখান থেকে আমদানি করি।
টিপু মুনশি বলেন, আসন্ন রমজানে সারাদেশে এক কোটি লোকের মাঝে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য দেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি রমজান পর্যন্ত আগের দামটা রাখার জন্য। কিন্তু ব্যবসায়ী ব্যবসা করবেই। এ বিষয়ে আমাদের সর্তক থাকতে হবে।
টিসিবির পণ্য আরও সুশৃঙ্খলভাবে বিক্রির পরিকল্পনা চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেকে মানুষ টিসিবি‘র পণ্য কেনাকে আবার পেশা হিসেবে নিয়েছেন। কেউ কেউ একবার নিয়ে আবার লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। এতে অনেকে পণ্য পাচ্ছেন না। ফলে টিসিবি‘র পণ্য বিক্রি কীভাবে আরও সুশৃঙ্খলভাবে করা যায়, তাদের কোনো তালিকা করে দেওয়া যায় কি না— এসব বিষয় নিয়ে আমরা ভাবছি। লাইনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও কার্ড দেওয়া বা ভোটের সময় ব্যবহৃত অমোচনীয় কালির ব্যবহার করা যায় কি না, এগুলোও ভেবে দেখা হচ্ছে।
ইভ্যালি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইভ্যালির বিষয়ে এখন আমাদের কিছু করার নেই। কারণ এটি বর্তমানে আদালতে চলে গেছে। আদালতই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, ই-কমার্স থেকে একজনের ১০টি মোটরসাইকেল কেনার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যে ব্যক্তি ১০টি মোটরসাইকেল কিনতে চান, তিনি ভোক্তা নন, ব্যবসায়ী। ফলে এরকম বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে।
ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর