Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাবুল-মিতুর সন্তানদের সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ মার্চ ২০২২ ২১:১৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে তাদের মা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় শিশু আইনের ধারা কঠোরভাবে অনুসরণ করে সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের চট্টগ্রামে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন।

বুধবার (১৬ মার্চ) এ সংক্রান্ত এক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

বাবুল আক্তারের শিশুবয়সী এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমানে তাদের দাদা আবদুল ওয়াদুদের তত্ত্বাবধানে মাগুরার বাসায় বসবাস করছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের ১৫ দিনের মধ্যে নিজের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছিলেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তার হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশের বিরুদ্ধে দুই শিশুর হেফাজতকারী হিসেবে বাবুলের চাচা অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান লাভু মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করেন। এতে দুই শিশুকে মাগুরায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আরজি জানানো হয়।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘শুনানি শেষে আদালত রিভিশন খারিজ করে দিয়েছেন। দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হাজিরের নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে শিশু আইনের ৫৩ ও ৫৪ ধারা কঠোরভাবে অনুসরণ করে সতর্কতার সাথে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের প্রয়োজনে চট্টগ্রামে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।’

বিজ্ঞাপন

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরের বছর ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।

২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

একইদিন (১২ মে) দুপুরে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।

মামলা করতে এসে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেছিলেন, চার বছর ধরে তাদের সঙ্গে মিতুর ছেলেমেয়েদের কোনো যোগাযোগ নেই। তারা নাতি-নাতনির মুখও দেখতে পারছেন না। বাবুল আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিতুর ছেলেমেয়েদের তাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন।

তবে মোশাররফ হোসেনের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে সেটি নিষ্পত্তি করেছে পিবিআই। আদালতের নির্দেশে এখন শুধুমাত্র বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে। ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

জিজ্ঞাসাবাদ বাবুল মিতু সন্তান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর