Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রতিদিনই বাড়ছে গ্যাসের বকেয়া

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ মার্চ ২০২২ ১০:০৭

ঢাকা: চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ছয় গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা। বকেয়া খাতায় নাম রয়েছে স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, রেল, স্থানীয় সরকার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। তালিকায় রয়েছে খোদ ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ-ইজিসিবি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) শতাধিক কোটি টাকার বকেয়া বিল।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, শুধু জ্বালানিতেই না, বিদ্যুতেরও বিশাল অংকের বিল বকেয়া পরে রয়েছে। করোনার কারণে এসব বিল আদায় কিছুটা বিলম্বিত হলেও শিগগিরই জোরেসোরে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ছয় গ্যাস বিতরণ কোম্পানির বকেয়া বিলের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এই বিশাল বকেয়ার তালিকায় সবচেয়ে বেশি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির। তিতাসের মোট বকেয়া ৬ হাজার ৬৩৯ কোটি ৫৭ লাখ। বকেয়ার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। তাদের বকেয়া ৮১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বকেয়া ৮০৫ কোটি ৯৭ লাখ। জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্টিবিউশনের বকেয়া ৭৩৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ১৭৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির বকেয়া ৯৯ কোটি ২ লাখ টাকা।

জানা গেছে, এই ছয় কোম্পানির বিশাল বকেয়া বিলের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছেই বকেয়া ৭৪৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে দুই বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কাছে পাওনা ৩৯০ কোটি টাকা। ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) কাছে বকেয়া গ্যাস বিলের পরিমান ১৯৯ কোটি টাকা। আর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে বকেয়া বিলের পরিমান ১৯১ কোটি টাকা।

এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া আরও ৩ শতাধিক কোটি টাকা। এরমধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর কাছে গ্যাস বিল বকেয়া ২১ কোটি ৫৩ লাখ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ১৬ কোটি, বিভিন্ন সার কারখানায় বকেয়া ১৩ কোটি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া ১২ কোটি টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া ৯ কোটি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া ৯ কোটি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া টাকার পরিমান ৫ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাছে ২ কোটি ৯৭ লাখ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে বকেয়া ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে ১ কোটি টাকা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে গ্যাস বিল বকেয়ার পরিমান ১ কোটি টাকা। আবাসিক গ্রাহকদের কাছে বকেয়া ৮১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে বকেয়ার পরিমান ৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দিন দিন বকেয়ার বোঝা বাড়ছেই। শুধু জ্বালানি বিভাগেই বকেয়া থাকেনি, বকেয়া বিদ্যুৎ বিভাগেও। দুই বিভাগ মিলিয়ে বকেয়ার পরিমান ১৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।

এদিকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে বকেয়া বিলের বোঝা দিনকে দিন বাড়ছে, অন্যদিকে পর্যাপ্ত জনবল নেই। যে কারণে অনেকটা চাপ রয়েছে তারা। নামপ্রকাশ না করার শর্তে তিতাসের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, এবার বকেয়া বিল আদায়ে অনেকটাই নড়েচড়ে বসছেন কর্মকর্তারা। কারণ বকেয়া গ্যাস বিল আদায়ে জ্বালানি বিভাগের চাপ রয়েছে। বিল আদায়ে ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি জ্বালানি বিভাগের দিক নির্দেশনা রয়েছে। দ্রুতই কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামবেন।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তি রয়েছে। বাড়তি গ্যাসের দামও। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জ্বালানি বিভাগ।

সারাবাংলা/জেআর/এএম

গ্যাসের বকেয়া বিল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর