রাষ্ট্রপতির কাছে দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ
২০ মার্চ ২০২২ ২২:৩০
ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে পেশ করা হয়েছে।
রোববার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ প্রতিবেদন পেশ করেন। দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক ও দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশনের কার্য-সম্পাদন, সম্পাদিত কাজের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক জবাবদিহিতা এবং সরকার প্রদত্ত সম্পদের ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত তথ্যসহ কমিশনের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া কমিশন তার দায়িত্বের অংশ হিসেবে স্ব-উদ্যোগে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষকদের সম্পৃক্ত করে ২৭ হাজার ৬২৯টি সততা সংঘ গঠন করা হয়েছে। ৫ হাজার ৭৫৬টি সততা স্টোর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দুদকের সাংগঠনিক কাঠামোতে গোয়েন্দা, পর্যবেক্ষণ, সম্পদ ব্যবস্থাপনা, এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গঠনের পর এতে প্রয়োজনীয় জনবল পদায়ন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা হয়েছে।
এদিকে, বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে নিম্ন আদালতে দুদক ও বিলুপ্ত ব্যুরোর মোট বিচারাধীন ৩ হাজার ৩৮২টি মামলার মধ্যে ১৭৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যার মধ্যে কমিশনের পক্ষে রায় এসেছে ১২১টিতে। আর দুদকের মামলায় সাজার হার ৭২ শতাংশ এবং বিলুপ্ত ব্যুরোর মামলায় সাজার হার ৪৮ শতাংশ। ফলে গড়ে মামলায় সাজার হার শতকরা ৬৮.৭৫ শতাংশ। এছাড়া ২০২১ সালে ৩ হাজার ৪৩৪টি মামলার মধ্যে ২০৩টির নিষ্পত্তি হয়েছে। যার মধ্যে কমিশনের পক্ষে রায় হয়েছে ১১৯টিতে। কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬০ শতাংশ এবং বিলুপ্ত ব্যুরোর মামলায় সাজার হার ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, গড়ে সাজার হার শতকরা ৫৮.৬২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুদক দৈনিক ও সাম্প্রতিক সেল (যাচাই-বাছাই কমিটি) ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৪৮৯টি অভিযোগ বাছাই করে ৮২২টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করে। ২ হাজার ৪৬৯টি অভিযোগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। ২০২১ সালে ১৪ হাজার ৭৮৯টি অভিযোগ হতে ৫৩৩টি অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ এবং ২ হাজার ৮৮৯টি অভিযোগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কমিশনের অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। একইসঙ্গে কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমিশনের বিদ্যমান জনবল কাঠামো যৌক্তিক করার জন্য কমিশনের মহাপরিচালকের (মানিলন্ডারিং) নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগী করে পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের জন্য কমিশনের সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম