Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আত্মহত্যা নয়, হত্যা করা হয়েছে বেরোবি শিক্ষার্থী তুষারকে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ মার্চ ২০২২ ০৯:৩৭

রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তানভীর আলম তুষার আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে হত্যা করা হয়েছে। তুষারের মৃত্যুর পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. ইফফাত শারমিনের করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তানভীর আলম তুষারকে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তুষারের বাবা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ হত্যার কোনো রহস্য তুলে আনতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

তুষারের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মোহসিন আলীর একমাত্র ছেলে তানভীর আলম তুষার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে তার ঘরের দরজা ভেঙে হারাগাছ থানার পুলিশ ভেতরে ঢুকে মাল্টিপ্লাগের তারের সঙ্গে আধাপাকা ঘরের কাঠের পাইরে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তুষারকে। পরে তুষারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এর আগে তার ফেসবুক আইডিতে ‘I QUIT for ever’ লিখে স্ট্যাটাস পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় সেদিন তুষারের বাবা মহসিন আলী জানিয়েছিলেন, মোবাইলে জুয়া খেলতেন তুষার। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুষার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এঘটনায় সেদিনই হারাগাছ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছিলো।

বিজ্ঞাপন

পরে তুষারের মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হলে প্রভাষক ডা. ইফফাত শারমিনের করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তানভীর আলম তুষারকে আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ তথ্য জানার পর তুষারের বাবা মহসিন আলী চলতি মাসের ৪ মার্চ বাদী হয়ে হারাগাছ থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন।

তবে তুষার জুয়া খেলতেন এসব মানতে নারাজ তার মা তাসলিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘তুষার শান্ত স্বভাবের ছিল। এলাকার কারও সঙ্গে জোরে কথা বলতো না। জুয়া খেলা কী তা সে বুঝতো না।’

তিনি আরও জানান, গত ৫ অক্টোবর তুষার তার এক বন্ধুর বাড়িতে যায় এবং সেখানে রাত্রী যাপন করে পরের দিন ৬ অক্টোবর বিকেলে বাড়িতে আসে। সে সময় ছেলেকে বিষন্ন থাকতে দেখা যায়। পরিবারের সবার সঙ্গে কথাও বলেছে। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে। পরদিন (৭ অক্টোবর) সকালে ঘরে ছেলের লাশ দেখতে পাই।

তুষারের বাবা মোহসিন আলী বলেন, ‘মেডিকেলের প্রতিবেদনে আমি জানতে পারি আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। হয়তো রাতের কোনো একসময় কেউ বাড়িতে এসে তুষারকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে কৌশলে পালিয়ে গিয়েছিল। তুষারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্ট অনুসন্ধান করলে হয়তো কোনো হত্যার রহস্য বের করা সম্ভব হবে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারাগাছ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু ছাইমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফরেনসিক বিভাগের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তুষারের বাবা মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এমও

আত্মহত্যা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বেরোবি শিক্ষার্থী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর