ধর্ষণ মামলায় আইনজীবী নেতা মোমতাজ উদ্দিনের আগাম জামিন
২৮ মার্চ ২০২২ ২২:৪১
ঢাকা: নিজ চেম্বারের জুনিয়র সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদীকে ছয় সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী নিজেই শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মির্জা মোহাম্মদ শোয়েব মুহিত।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মির্জা মোহাম্মদ শোয়েব মুহিত বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় হাইকোর্ট মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদীকে ছয় সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। এই সময়ের পর আসামিকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।’
তবে মামলার বাদী (২৮) হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবেন বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার পায়নি। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করব।’
এর আগে, আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন তারই চেম্বারের জুনিয়র এক আইনজীবী। যিনি ২০২১ সালে আইনজীবী হিসেবে বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত হন।’
ওই নারী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। জুনিয়র হওয়ায় এবং তার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে মেহেদী তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এরপর মেহেদীর সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন সময়ে মেহেদী তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পাশাপাশি স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করতে বলেন।
এজাহার থেকে আরও জানা যায়, মেহেদীর এমন প্রস্তাবে রাজি হয়ে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর স্বামীকে তালাক দেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে তাকে চাপ দিলেও বিয়ে করেননি মেহেদী। সর্বশেষ বার কাউন্সিলে অভিযোগ দেওয়ার কথা জানালে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি গ্রিন রোডের একটি কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করেন মেহেদী।
এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিয়ে করলেও বিবাদী (মেহেদী) তাকে কোনো স্বীকৃতি দেয়নি এবং তাকে তার ঘরে তুলে নেননি। এমতাবস্থায় গত ২৩ মার্চ রাত ১১টায় মেহেদীর কলাবাগানের গ্রিন রোডের ‘গ্রিন বসতি হেলমেট’ নামের অ্যাপার্টমেন্টে উঠতে গেলে মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী (৬০) এবং তার স্ত্রী তাকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেন।
এর পরের দিন ২৪ মার্চ সকালে মোমতাজ উদ্দিনের জুনিয়র আরেক আইনজীবীর মাধ্যমে জানতে পারেন মেহেদী তাকে দিয়েছেন। পরে মোমতাজ উদ্দিন মেহেদীকে ফোন দিয়ে তালাক দেওয়ার কারণ জানতে চান। তখন মেহেদী বিকেলে দেখা করে সব সমাধান করার কথা জানান। এবং আপাতত কোনো মামলা না করার কথা বলেন।
এর পর গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় ওই নারীকে আপস-মিমাংসার কথা বলে রমনা থানাধীন সেগুনবাগিচার ১০ বসতি অ্যাম্বাসেডর নামের একটি বাসায় নিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন মেহেদী। এরপর গত ২৭ মার্চ বিকেলে রাজধানীর রমনা থানায় নিজে বাদী হয়ে ওই নারী মামলা করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম