বাহারি ইফতারে উৎসব শুরু পুরান ঢাকায়
৩ এপ্রিল ২০২২ ২১:১৯
ঢাকা: বাহারী ইফতার উৎসবে জমে উঠেছে পুরান ঢাকা। পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে চকবাজার, লালবাগ, নাজিমুদ্দিনরোডসহ শহরের অলিতে গলিতে মানুষেরা ভিড় করে কিনেছে হরেক রকমের ইফতার। বিক্রি ভালো হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
পুরান ঢাকায় ইফতারের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত চকবাজার। রোজার প্রথম দিনে এখানকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারের মধ্যে বড় লোকের পোলায় খায় নিয়ে ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল বেশ। এছাড়াও পেঁয়াজু, বেগুনি, ডিম ও চিকেন চপ, বিফ স্টিক, শামি কাবাব, রেশমি কাবাব, সুতিকাবাব, হালিম, কাটলেটসহ অন্যান্য খাবারের প্রতিও রোজদারদের ঝোঁক ছিল ভালই।
মোগলদের তৈরি করা চারশ বছরের পুরনো এই শহর আরও যেসব তৈরি খাবারের জন্য বিখ্যাত তার মধ্যে কাচ্চি আর বিরিয়ানি অন্যতম। মধ্য এশিয়ার এই খাবারগুলো নিয়ে এখানে উৎসাহের শেষ নেই। রোজার প্রথম দিনে সেই উৎসাহে যেন জোয়ার এসেছে। নান্না, হাজী, আদি আলাউদ্দীন, হানিফসহ ছোট বড় কোনো দোকানেই ইফতারের আগে বসার জায়গা পাওয়া যায়নি। অনেকেই এসব খাবার খেয়েছেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
রোজাদারদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের প্রথম দিনের ইফতার আয়োজন অনেকটা উৎসবের মতো করে হয়। এজন্যই এই ভিড়। পুরনো ঢাকার খাবারের প্রতি মানুষের অতি আকর্ষণও ভিড়ের অন্যতম কারণ। বিক্রেতারা বলছেন, যেকোনো বছরের তুলনায় এবার প্রথম রমজানে তুলনামূলকভাবে বেশি খাবার বিক্রি করেছেন তারা।
তবে এসব খাবার কিছুটা উচ্চবিত্ত মানুষের জন্য বিধায় নিম্নবিত্তদের ভরসার জায়গা হয় গলির ভেতরের ভাজাপোড়ার দোকান। কোনো কারণে এবছর এসব দোকানে বিক্রি অনেক কম। দোকানিরা বলছেন, পেঁয়াজু, পাকুড়া আর ছোলাবুটের ক্রেতা কমে গেছে। তাছাড়াও প্রথম রোজায় পরিবারের সঙ্গে ইফতার করার একটা রীতি রয়েছে সেকারণেও হয়তো বিক্রি কম।
এসব দোকানে বেগুনি, পেঁয়াজু, সমুচা, আলুর চপ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা করে। ডিমের চপ ১৫ টাকা, জালি কাবাব ১৫ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, বুন্দিয়া কেজি ১২০ টাকা, চিকেন ললি পোপ ৩০ টাকা পিস, চিকেন বল ১৫ টাকা পিস, হালিম ছোট বাটি ৬০ টাকা মাঝারি ১২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
একজন দোকানি বলেছেন, একজন চাইলে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় ভালো ইফতারি করতে পারবেন। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে খরচ আরও কমত বলেও জানান তিনি।
এদিকে অনুমতি ছাড়া ইফতার বাজার বসানোর অভিযোগে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছিলেন রাজধানীর চকবাজারের খাবার ব্যবসায়ীরা। প্রথম দিন দুপুরে ইফতার সামগ্রী নিয়ে বসতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা।
পুলিশের দাবি, কোনোরকম অনুমতি না নিয়েই ব্যবসায়ীরা ব্যস্ততম সড়কে ইফতার বাজার বসানোর তোড়জোড় করছেন। ফলে সড়কটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছরে কোনো ব্যবসা হয়নি। এজন্য এবছর রাস্তায় ইফতার বিক্রির অনুমতি চান তারা। পরে পুলিশ অনুমতি দিলে চকবাজারে দোকান নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।
সারাবাংলা/টিএস/এসএসএ