সিরাজগঞ্জ: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উদ্বোধনের দ্বারপ্রান্তে। অত্যাধুনিক ও উন্নতমানের চিকিৎসা দিতে সবধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ইতোমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে।
৮৮২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩১ একর জমির ওপর শহরের পাশেই শিয়ালকোল এলাকায় শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। হাসপাতালটিতে স্থাপন করা হয়েছে সিটিস্ক্যান, নিউরো সার্জারি মেশিন, ফুসফুসের অপারেশন থিয়েটার, বিনা-অপারেশনে কিডনির পাথর অপসারণের জন্য লিথোপেছি মেশিন, অর্থপেটিক্স অপারেশনের জন্য সিআম এক্সরে মেশিন, ব্রেস্ট ক্যান্সার চিহ্নিত করার জন্য মেমোগ্রাফি মেশিন, চক্ষু রোগীদের জন্য লেসিক অপারেশন থিয়েটার, অপারেশনের আগে যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করার জন্য স্টেলাইজেশন মেশিন, অত্যাধুনিক ব্ল্যাড ব্যাংকের ব্যবস্থা, আনা হয়েছে উন্নতমানের ব্ল্যাড কালেকশন চেয়ার। বসানো হয়েছে রক্তের গ্লুকোজসহ সবধরনের রক্ত পরীক্ষার জন্য অটোমেটেড বায়োকেমেস্ট্রি এনালিজার, অটোমেটেড হেমোটোলজি এলালাইজার মেশিন এবং হার্টের অপারেশন ও রিং পড়ানোর জন্য বসানো হয়েছে এনজিওগ্রাম।
এই প্রকল্পের পরিচালক কৃষ্ণ চন্দ্র পাল বলেন, নির্মাণের শুরু থেকেই আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। নির্মাণকাজ তদারকি থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল স্থাপন সম্পন্ন করতে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত কাজ করছি। হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি জার্মানি, কানাডা, ভারত, কোরিয়া, জাপান, ইউকে, ইউএসএ, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শতভাগ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আনা হয়েছে। বড় বড় মেশিনগুলো ইতোমধ্যেই স্থাপন সম্পন্ন করা হয়েছে। গুণগতমানের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, এখানকার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা হয়েছে সম্পূর্ণ ইজিবির মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে করোনার কারণে মেডিকেলের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি হাতে পেতে কিছুটা সময় লেগেছে এবং প্রয়োজনীয় ভবনগুলো সম্পন্ন না হওয়ায় দ্রুত সময়ে মেশিনগুলো স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রায় ৫ শতাধিক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসেই এ হসপিটালটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেলেই হসপিটালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে। এজন্য ৫০০ বেড, ১৭টি অপারেশন থিয়েটার, ৮টি ভিআইপি কেবিন, ৮০টি সাধারণ কেবিন, আইসিইউ, সিসিইউ, সার্জারি বিভাগ, কাডিওলোজি, শিশু বিভাগ, চক্ষু বিভাগসহ সকল প্রয়োজনীয় বিভাগগুলো প্রস্তুত রয়েছে।