Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কানাডার নাগরিক সেই তরুণী আপাতত বাবা-মায়ের জিম্মায় থাকবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ এপ্রিল ২০২২ ১৩:২১

ফাইল ছবি

ঢাকা: জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক সেই তরুণী আপাতত তার বাবা-মায়ের কাছে থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১০ এপ্রিল) জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক সেই তরুণী এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তার বাবা-মাকে হাইকোর্টে হাজিরের পর শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ও জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শাহীনুজ্জামান, আয়েশা আক্তার ও রোহানী সিদ্দিকা। বাবা-মায়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজিউল্লাহ ও আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

এ ছাড়া শুনানির সময় আদালতে কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

আজ আদালত বলেছেন, ওই তরুণী আপাতত তার বাবা-মায়ের কাছে থাকবে। একই সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত এ বিষয়ে শুনানি মুলতবি করা হলো।

ওইদিন উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।

আজ শুনানির এক পর্যায়ে আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, ‘আমারও একটি মেয়ে আছে, আমিও মা। আমিও বুঝি…। সন্তান যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয় তখন তাকে কোনো কিছুতে জোর করে বাধ্য করা যাবে না। তাতে আরও বেশি অবাধ্য হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বাবা-মাকে সন্তানের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করতে হবে। সম্পর্ক জটিল করা যাবে না। সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন গড়তে হবে।’

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আরও বলেন, ‘এখনকার সন্তানদের চিন্তাধারা অন্য রকম। যেটি আমাদের সময়ের মতো না। এখন বাচ্চারা আমাদের অনেক কিছু শেখায়। প্রযুক্তিতে তারা এগিয়ে। বাবা-মাকে বিভিন্ন বিষয়ে তারা গাইড করে। এই যে গাইড করা, এটার মধ্যেও কিন্তু এক ধরনের মজা আছে। এটাকে আমাদের অভিভাবকদের সম্মান করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ থেকে কানাডায় চলে যেতে চাওয়া মেয়ের বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, ‘ওর জন্ম ওখানে (কানাডায়)। ওখানকার ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সে। এখানে তার কোনো বন্ধু নাই। এখানে সে তার মতো পরিবেশ পায় না। এখানে যদি তার জন্ম হতো তাহলে এখানকার পরিবেশ সে মানিয়ে নিতে পারতো। তাই আমরা বলবো, আপনারা (বাবা-মা) ওর ইচ্ছাটাকে সম্মান দিন। প্রয়োজনে আপনারা গিয়ে ওর সাথে থাকুন। ওর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন। শেষ বয়সে ও-ই আপনাদের লাঠি হবে। ওকে কানাডায় যেতে বাধা দিবেন না। মনে রাখবেন কোনো কিছু বাধ্য করলে তার ফল ভালো হয় না।’

আইনজীবীরা জানান, বাংলাদেশি বাবা-মায়ের ওই সন্তানের জন্ম কানাডায়। ১৯ বছরের ওই তরুণী কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।

এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ডফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনকে তাকে জোর পূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

পরে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র রিট দায়ের করে।

গত সপ্তাহে ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রাজধানীর উত্তর মুগদায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বাবা-মায়ের হেফাজতে থাকা জন্মসূত্রে কানাডীয় তরুণীকে আজ (১০ এপ্রিল) হাজির করাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সে অনুসারে আজ তরুণীকে তার বাবা-মাসহ হাজির করা হয়। এরপর আদালত একান্তে ওই তরুণীর কথা শোনেন। তারপর তার বাবা-মায়ের কথাও শোনেন।

শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবীকে আবেদন সংশোধন করে পুনরায় আবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়ে আগামী মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

কানাডার তরুণী কানাডার নাগরিক হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

বিদেশ বিভুঁই। ছবিনামা-১
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর