নেশার টাকা জোগাড় করতেই ফুপাকে খুন
১১ এপ্রিল ২০২২ ১৭:১৩
ঢাকা: রাজধানী উত্তরায় নিজ বাসায় ব্যবসায়ী মো. শামসুদ্দিন আহমেদকে (৭৫) হত্যার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি পুলিশের দাবি, নেশার টাকা জোগাড় করতে ও পাওনাদারদের দেনা পরিশোধের জন্য আপন ফুপা শামসুদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করে পলাতক তানভীর ও তার সহযোগীরা। হত্যার পর স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এদিকে দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করতে পারলেও এখনও পলাতক রয়েছে মূল আসামি তানভীর।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতার দু’জন হলেন- মো. মুসলিম (২০), ও মো. আবু সাফি (২৫)। রোববার (১০ এপ্রিল) বিকেলে এই দু’জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি শাটার গান, ৪ রাউন্ড গুলি, লুণ্ঠিত অলংকার ও নগদ চার হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত অপরাধের ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে। নিকট আত্মীয়রা বাসায় প্রায়ই আসে। ঢাকা শহরে অনেক বাসায় একজনের পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাসায় আসে। আত্মীয়ের সঙ্গে অপরিচিত কেউ বাসায় এলে সবাই সাবধানে থাকবেন। প্রতিটি পরিবারের সচেতন থাকা উচিত। নিজের সন্তান কী করছে সবাইকে খোঁজ নেওয়া উচিত।
গোয়েন্দা প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘পাঁচজনের সংসারে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ শামসুদ্দিন সুখে শান্তিতে ছিলেন। তানভীর ছিলেন শামসুদ্দিনের স্ত্রী রাশিদা বেগমের ভাতিজা। গত ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাশিদার ভাতিজা তানভীরসহ অপরিচিত আরও দুজন আসেন তাদের বাসায়। এর কিছুক্ষণ পর রান্নাবান্না শেষে নাতনিকে স্কুল থেকে বাসায় আনার জন্য বাইরে যান রাশিদা বেগম। এ সময় বাসায় একা ছিলেন শামসুদ্দিন। এরপর স্কুল থেকে নাতনিকে নিয়ে বাসায় এসে রাশিদা দেখেন তার স্বামী শামসুদ্দিন খাটের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আর ভাতিজাসহ অন্যরা পালিয়ে গেছে।’
ডিবি প্রধান বলেন, ‘কেন নিজের ফুপাকে গলা কেটে হত্যা করল তানভীর? মামলার পর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রথমে মুসলিম নামের একজনকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সাফি নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখান থেকে অস্ত্র, গুলি, কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘তানভীর নেশা করতেন এবং ঋণগ্রস্ত ছিলেন। গ্রেফতার দুজন ও ভারতে পলাতক তানভীরসহ চারজন মিলে একটি টিম গঠন করে। ওই টিম এমন আরও কত ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা এখনো ডিটেক্ট করতে পারিনি। তানভীরের ধারণা ছিল, ফুপুর বাসায় গেলে কয়েক লাখ নগদ টাকা পাওয়া যাবে। এই টাকা দিয়ে সে ঋণ থেকে মুক্ত হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে ৮০ নম্বর নিজ বাড়ির পাঁচতলায় নৃশংসভাবে খুন হন ব্যবসায়ী মো. শামসুদ্দিন। নিহতের ভাতিজা তানভীরসহ তিন জন এই খুনের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম