Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাঈদীকে আসামি না করায় রায়ে আগ্রহ নেই হুমায়ুন আজাদ পরিবারের

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ এপ্রিল ২০২২ ০৮:১৭

হুমায়ুন আজাদ, ফাইল ছবি

ঢাকা: লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে আজ বুধবার (১৩ এপ্রিল)। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল মামুনের আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। তবে ১৮ বছর পরে হতে যাওয়া এই রায়ে আগ্রহ নেই তার পরিবারের।

এ বিষয়ে নিহত হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির বলেন, ভাই হত্যা মামলার রায় হচ্ছে ১৮ বছর পর। কিন্তু এ রায় নিয়ে আমাদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। এই ঘটনা যার কারণে ঘটেছে, সেই মূলহোতা জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে আসামি করা হয়নি। হামলার পর মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তখন তিনি নিজেই সাঈদীকে হামলার জন্য দায়ী করেছিলেন। ভিকটিম তো বলেই গেছে সাঈদী এ ঘটনায় জড়িত। কিন্তু তাকে আসামি করা হয়নি।

তিনি বলেন, ২০০৪ সালের মামলার রায় হচ্ছে ২০২২ সালের মাঝের দিকে। ১৮ বছর পর এসে। শুনেছি এই মামলায় দুইজন জেলে আছে, বাকি দুইজন পলাতক। আদৌও তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কী না, তা জানি না। তদন্ত সংস্থা জানে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান চৌধুরী দাবি করেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পাবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলছেন, আসামিরা জড়িত রাষ্ট্রপক্ষ এমন কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। তারা সাক্ষ্য-প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আশা করছি, আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন, খালাস পাবেন।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হন ড. হুমায়ুন আজাদ। চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় তাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় ২২ দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট মারা যান প্রতিভাবান এই লেখক।

হামলার পরদিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে তা হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। এছাড়া একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনেও অপর একটি মামলা হয়।

হুয়ায়ুন আজাদের ওপর হামলার ঘটনায় তার ভাইয়ের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর সিআইডির পুলিশ কাজী আবদুল মালেক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি চার্জশিট দাখিল করেন।

২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। এ মামলায় মোট ৪১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত ২৭ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার এই তারিখ ধার্য করেন। অপর দিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- জেএমবির সূরা সদস্য আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন, মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শাওন, রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ ও নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু।

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রিজনভ্যান থেকে তিন আসামি ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। ওই তিন জনের মধ্যে সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ এ মামলার আসামি। এদের মধ্যে রাকিব ওইদিন রাতে ধরা পরে এবং পরে ক্রস ফায়ারে নিহত হন। মিজানুর রহমান এবং আনোয়ারুল আলম কারাগারে আছেন। নুর মোহাম্মদ এবং সালেহীন পলাতক।

২০১০ সালের ১৮ অক্টোবর আসামি আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ৫ দফায় বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত এ মামলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এআই/এএম

দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী হুমায়ুন আজাদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর