বিয়েতে চাপ দেওয়ায় আবাসিক হোটেলে খুন
১৯ এপ্রিল ২০২২ ১৬:৫৬
রাজশাহী: তিন মাস প্রেমের সম্পর্ক চলার পর বিয়েতে চাপ দেওয়ার কারণে নগরীর একটি আবাসিক হোটেলে খুন হন জয়নব বেগম নামের এক নারী। এ ঘটনায় ওই নারীর কথিত প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। এর আগে গতকাল সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ওই প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত জয়নব বেগম নাটোর সদর থানার আটঘরিয়া গ্রামের তসির প্রামানিকের মেয়ে। গত রোববার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নগরীর ড্রিম হ্যাভেন হোটেল থেকে জয়নবের লাশ উদ্ধার করা হয়। জয়নবের আগে বিয়ে হলেও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার দুটি ছেলে ও দুটি মেয়ে রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত প্রেমিকের নাম মিঠুন আলী। তিনি নাটোর জেলার সদর থানার আগদিঘা গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। মিঠুন ও জয়নব স্থানীয় একটি ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন। খুনের ঘটনার পর গতকাল সোমবার দুপুরে জয়নব বেগমের বড়ভাই তছলেম উদ্দিন রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের কাছে মিঠুন খুনের কথা স্বীকার করেছেন। মিঠুন জানায়, জয়নবের সঙ্গে তিন মাস থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল তার। শারিরীক সম্পর্কও ছিল তাদের। জয়নব গত দুই সপ্তাহ থেকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়ার পরিকল্পিতভাবে তাকে বালিশচাপা দিয়ে খুন করা হয়।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, মিঠুনকে গতকাল সোমবার রাতে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে রাজপাড়া থানা পুলিশ। হোটেলের সিসি ক্যামেরা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টায় তারা দুজনে ৪০৩ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। দুপুর দুইটা চার মিনিটে সেই ঘরে বাইরে থেকে তালা মেরে নিজের মুখ আড়াল করে বেরিয়ে যান মিঠুন। তিনি জয়নবের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যান।
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, রাজপাড়া থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নেয়। মিঠুনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে পুলিশের একটি দল গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর নাটোরে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত রোববার দিবাগত রাতে নগরীর হোটেল ড্রিম হ্যাভেনের ৪০৩ নম্বও রুম থেকে জয়নব বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে পরিচয়পত্র থাকার কারণে জয়নব বেগমের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
হোটেলের রেজিস্ট্রারের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার সকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে জয়নব ও মিঠুন ওই হোটেলে উঠেন। হোটেলের রেজিস্ট্রারে জয়নবের নাম লেখা হয় জুলেখা (২৩) আর মিঠুন নিজেকে মিজান (২৭) হিসেবে নাম লেখেন হোটেলের রেজিস্ট্রারে। দুইজনের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বলে উল্লেখ করা হয়।
সারাবাংলা/এনএস